প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের আদালতে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর ১ নম্বর আমলি আদালতে (সদর) মানহানি ও ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক।
বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহিদ ব্যাপারী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মানহানি (পেনাল কোডের ৫০০/৫০১) ও ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ অভিযোগ করা হয়েছে। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাছাড় অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গণ্য করতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক দুটি গাড়ি নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে যান। এজলাসে গিয়ে শামীম হক তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে মামলার আবেদন করেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯ মে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে যে বক্তব্য দেন, তা ওই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে শামীম হক বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রচারমাধ্যম, অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পেয়ে মর্মাহত ও অপমানিত হন। এ বক্তব্যে ফরিদপুরের অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় ও অপমান বোধ করেন। ওই বক্তব্যের পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতা–কর্মী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এ বক্তব্যে বাংলাদেশে বড় ধরনের অরাজকতা সৃষ্টিসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটতে পারে।
২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পাশাপাশি শামীম হক এজাহারে মানহানির অভিযোগও এনেছেন। লিখিত আবেদনে তিনি জানান, আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে নেত্রীর বিরুদ্ধে দেওয়া ওই বক্তব্য তাঁর ও তাঁর সাক্ষীদের মানহানি ঘটেছে, যা টাকার অঙ্কে নিরূপণ করা অসম্ভব হলেও ২০ কোটি টাকা হবে।
মামলায় সাক্ষী হিসেবে সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ ব্যাপারী, আইনবিষয়ক সম্পাদক অনিমেষ রায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি স্বপন পাল, গোয়ালচামট মহল্লার বাসিন্দা শাহ মো. আবু জাফর, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সোহেল রেজা ও শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. ছানোয়ার হোসেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত আদালতের আদেশের অনুলিপি হাতে পাননি। অনুলিপি পাওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।