পঞ্চগড়ে আলু-পেঁয়াজসহ নানা সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন একদল তরুণ। ব্যাগ হাতে সারিতে দাঁড়িয়ে এসব সবজি কিনছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করছেন সেনাসদস্যরা। বাজারমূল্যের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি সাধারণ ক্রেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চগড় সরকারি মিলনায়তন চত্বরে এমন চিত্র দেখা গেল। ‘খেত থেকে আনা কৃষকের পণ্য, সুলভ মূল্যে জনগণের জন্য’ স্লোগানে সাধারণ ক্রেতাদের ন্যায্যমূল্যে কেনাকাটার সুবিধার্থে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলার সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরাম এই ন্যায্যমূল্যের বাজার চালু করেছে।
এর আগে সকালে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী ন্যায্যমূল্যের বাজারের উদ্বোধন করেন। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সকালে ন্যায্যমূল্যের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন পণ্যের মূল্যতালিকা টাঙানো। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু, দুই কেজি পেঁয়াজসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য শাকসবজি কিনতে পারছেন। সেখানে প্রতি কেজি আলু ৫৫ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, লালশাক ৩০ টাকা, প্রতিটি লাউ ২০ টাকা, প্রতি কেজি করলা ২০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, মুলা ৩৫ টাকা, পালংশাক ২৫ টাকা, ডাঁটাশাক ১৮ টাকা ও বেগুন ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পঞ্চগড় পৌরসভার রামের ডাঙ্গা এলাকার মুক্তা বেগম (৩২) সবজি কিনতে ন্যায্যমূল্যের বাজারে আসেন। মুক্তা বেগম বলেন, ‘এখানে এসে বাঁধাকপি, আলু আর শিম কিনলাম। প্রতিটাতেই বাজারের চেয়ে কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পেলাম। এভাবে এই দোকান চললে আমাদের মতো গরিব মানুষের অনেক উপকার হবে।’
হেজারুল রশিদ প্রধান (৬১) নামের এক ক্রেতা বলেন, সারিতে দাঁড়াতে হলেও বাজারের চেয়ে কম দামে পাচ্ছেন, এতেই অনেক খুশি। ডিম, তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য বিক্রি হলেও তাঁরা আরও উপকৃত হতেন।
পঞ্চগড় জেলা সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের সভাপতি আহসান হাবিব সরকার প্রথম আলোকে বলেন, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বাজারে আনতে আনতে হাতবদলের মাধ্যমে দাম বেড়ে যায়। এতে সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দামে শাকসবজি কিনতে হয়। ক্রেতাদের হাতে সুলভ মূল্যে পণ্য তুলে দিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু করা ন্যায্যমূল্যের বাজারে তাঁরা সহায়তা করছেন।
জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী প্রথম আলোকে বলেন, শাকসবজির বাজার সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা উপকৃত হবেন বলে আশা করছেন। ন্যায্যমূল্যের এই বাজার প্রতি শুক্র ও শনিবার চলবে। ক্রেতাদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে বাজারের পরিধি বাড়ানো হতে পারে।