বরিশাল সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাঁদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে মাদকসংশ্লিষ্টতার অপরাধে ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া আট শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আজ সোমবার বিকেলে ওই আইএইচটির অধ্যক্ষ মানস কৃষ্ণ কুন্ডু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কৃত আট শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইএইচটি সূত্রে জানা যায়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ছাত্রাবাস এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ছাত্রত্ব স্থগিত হওয়া শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন আইএইচটির রেডিওগ্রাফি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ জন্য তাঁকে মাদকাসক্ত নিরাময়কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া সতর্ক করা হয়েছে ফিজিওথেরাপি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মহিন উদ্দিনকে। এ ছাড়া ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ল্যাবরেটরি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নাবিল মোস্তফা, ডেন্টাল তৃতীয় বর্ষের জোবায়েদ আলম, একই অনুষদের মো. সাব্বির আহম্মেদ, ফার্মেসি তৃতীয় বর্ষের মো. মুকিম আলম, দ্বিতীয় বর্ষের মো. রাইসুল ইসলাম, ফিজিওথেরাপি তৃতীয় বর্ষের এস এম সাহিবুল ইসলাম ও দ্বিতীয় বর্ষের মো. বেল্লাল এবং রেডিওগ্রাফি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. ফয়সাল আলম।
আইএইচটি প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ১০ নভেম্বর বরিশাল আইএইচটি শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ২১ নভেম্বর দোষীদের শাস্তির সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। সে অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১০ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা ভবিষ্যতে মাদক এবং বহিরাগতমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের দাবি জানান।
৬ দফা দাবি আদায়ে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) বরিশালের শিক্ষার্থীরা কিছুদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তবে সম্প্রতি সিনিয়র (জ্যেষ্ঠ) ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে নানা কথা বলা শুরু করেন। কিন্তু যাঁরা এগুলো করছিলেন তাঁদের শুরু থেকে কর্মসূচির সঙ্গে দেখা যায়নি। আর এ নিয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা আলোচনা করায় গত ১০ নভেম্বর দুপুরে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এরপর পর্যায়ক্রমে ছাত্রাবাসের ভেতরে থাকা জুনিয়র শিক্ষার্থীদের খুঁজে খুঁজে মারধর করেন তৃতীয় বর্ষের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী।