হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তাহুরা সুলতানা। গত শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ায়
হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তাহুরা সুলতানা। গত শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ায়

দেশের পথে পথে অপার সৌন্দর্য, তার টানে টেকনাফ থেকে হেঁটে তেঁতুলিয়া যাত্রা তরুণীর

দেশের পথে পথে ছড়িয়ে আছে অপার বিস্ময় আর সৌন্দর্য। কেবল সেই সৌন্দর্যের টানেই দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত হাঁটার সংকল্প করতে পারে কেউ? উত্তরটা দিচ্ছেন তাহুরা সুলতানা (২৫) নামের চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এক তরুণী। দেশ দেখা আর মানুষকে হাঁটতে উদ্বুদ্ধ করাই তাঁর লক্ষ্য। একা হাঁটা শুরু করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পথে পথে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই।

গত শুক্রবার সকাল ছয়টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেন তাহুরা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তিনি ১১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পৌঁছেছেন।

তাহুরা সুলতানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা রশিদ আহমেদ ও তৈয়বা খাতুন দম্পতির মেয়ে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন তিনি।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে যাত্রা করে তাহুরা। গত শুক্রবারের ছবি

তাহুরা জানান, দেশের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ করতেই তাঁর এই যাত্রা। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তাঁর এই পদযাত্রার খরচও বহন করছেন নিজে। অনলাইনে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত টাকা জমিয়ে তিনি এ যাত্রায় নেমেছেন।

তাহুরা বলেন, ‘পরিবারে আমি সবার ছোট। শৈশব থেকেই ঘোরাঘুরি পছন্দ করি। চ্যালেঞ্জিং কোনো বিষয় গ্রহণ করতে ভালো লাগে। এসব কারণেই হেঁটে দেশভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিই। যাত্রা শুরুর পর যেখানেই বিরতি নিচ্ছি, সেখানে মানুষের ভালোবাসা ও স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় আমি অভিভূত।’

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে যাত্রা করে তাহুরা। গত শুক্রবারের ছবি

হাঁটার মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য ভালো থাকে জানিয়ে তাহুরা বলেন, ‘সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা জরুরি। তাই এই পদযাত্রার মাধ্যমে মানুষও যাতে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ হয়, সেটি আমি চাই।’

তাহুরার পদযাত্রা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার বলে মন্তব্য করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী। তিনি বলেন, একজন নারী হিসেবে তাহুরা সুলতানার এই পদক্ষেপকে উপজেলা প্রশাসন সাধুবাদ জানায়। তাঁকে দেখে মানুষ সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটতে উদ্বুদ্ধ হবেন।