বাজিতপুরে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা, অসুস্থ হয়ে স্ত্রীর মৃত্যু

আগুনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত মো. শাহজাহানের ঘর। বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের মৈতপুর গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহানের বাড়িতে রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাঁর স্ত্রী আকলিমা বেগম (৬৭) আতঙ্কিত হলে অসুস্থ হয়ে মারা যান। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের মৈতপুর গ্রামে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে। তবে কারা আগুন দিয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি পরিবার ও পুলিশ।

আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য। তাঁর ছোট ভাই আইনজীবী আরকান মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই শাহজাহান বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তাঁরা একই বাড়িতে থাকেন। তাঁর ভাইয়ের নামে কয়েকটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তাঁর ভাই পলাতক। বাড়িতে ভাবি আকলিমা বেগম একা থাকেন। গত ৫ আগস্টের পর তাঁদের বাড়িতে এক দফা ভাঙচুর ও মুরগির খামারে লুটপাট চালানো হয়। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ওই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। কিন্তু তখন আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনায় ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী আকলিমা বেগম
ছবি: সংগৃহীত

আরকান মিয়া আরও বলেন, এবার তৃতীয় দফায় গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে একদল লোক জানালা ভেঙে ঘরের ভেতর কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। সারা বাড়িতে আগুন দেখে ভাবি আকলিমা বেগম আতঙ্কিত হয়ে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। পরে রাত ১১টার দিকে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চান আরকান মিয়া।

শাহজাহানের ছেলে আবুল হায়াত বলেন, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার আগেই মা মারা যান। চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন, হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মা মারা যেতে পারেন।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন দেওয়ার কথা শুনে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরাদ হোসেন। ওসি বলেন, দুর্বৃত্তরা যখন ঘরে আগুন দেয়, তখন আকলিমা বেগম ঘরে ছিলেন না। বাড়ির পাশে মুরগির খামারে কাজ করছিলেন। আগুন দেওয়ার অন্তত দেড় ঘণ্টা পর আকলিমা অসুস্থ হন এবং পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান। ওসি আরও বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে বা কারা আগুন দিয়েছে, সেটা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শাহজাহানের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।