মাটির বাড়িটি বজ্রপাতে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। উড়ে গেছে এর ছাদ। ঘরের আসবাব, হাঁড়িপাতিল—সবই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা মা ও ছেলে।
আজ রোববার ভোর পাঁচটায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের মধ্য বেতছড়ি গ্রামে। নিহত দুজন হলেন বাসচালক ছাদেক মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম (৩০) ও তাঁর ছোট ছেলে হানিফ মিয়া (৮)। কর্মরত থাকায় ছাদেক মিয়া তখন ঘরে ছিলেন না। আর বড় ছেলে মো. হাফিজুর রহমান (১০) এই ঘটনার সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বের হয়। এ কারণে সেও বেঁচে যায় দুর্ঘটনা থেকে।
দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম বলেন, ভোররাতে বজ্রপাতে হাসিনা বেগমের ঘরে আগুন লেগে যায়। এ সময় ঘুমিয়ে থাকা মা হাসিনা বেগম ও ছেলে মো. হানিফ পুড়ে মারা যায়। বাড়িতে থাকা বড় ছেলে মো. হাফিজুর রহমান প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে গেলে প্রাণে বেঁচে যায়। খবর পেয়ে দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে উপজেলাজুড়ে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুড়ে যাওয়া মাটির ঘরের ছবি শেয়ার করেছেন।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নুরুল হক বলেন, নিহত ব্যক্তিদের লাশ এমনভাবে পুড়েছে, যা চেনারও কোনো উপায় নেই। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী ছাদেক মিয়া গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আজ ভোরে খাগড়াছড়ি এসেছিলেন। এসেই মুঠোফোনে ঘটনা শুনে বাড়িতে চলে এসেছেন।
দীঘিনালার পাশাপাশি একই সময়ে জেলার রামগড় উপজেলার দুর্গম হাজাছড়া এলাকায় বজ্রপাতের ঘটনায় গনজ মারমা (৫০) নামের আরও একজন মারা গেছেন। নিহত গনজ ওই এলাকার বাসিন্দা কংজ্র মারমার ছেলে।
হাজাছড়ার কার্বারি চাইলাপ্রু মারমা বলেন, বজ্রপাতের সময় বাড়ির উঠানে বাঁধা গরু গোয়ালঘরে তুলতে যান গনজ মারমা। এ সময় বজ্রপাতের শিকার হন তিনি। বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যুর পাশাপাশি দুটি গরুরও মৃত্যু হয়েছে।