রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে

দেশকে অস্থিতিশীল করতে যত পদ্ধতি নেওয়া দরকার, সেটা করা হচ্ছে: রিজভী

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য যত রকম পদ্ধতি নেওয়া দরকার, সেটা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘চিন্ময় গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী। হঠাৎ ইসকন নামের একটি সংগঠনের বিভিন্ন তৎপরতা দেখা গেল। সেই তৎপরতার মধ্যে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য যত রকম পদ্ধতি নেওয়া দরকার, সেটা করা হচ্ছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে ‘ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এ কথাগুলো বলেন।

ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর চিন্ময়কে মুক্তি দেওয়ার জন্য বলে, শেখ হাসিনার পোষ্য সন্তান যুবলীগ-ছাত্রলীগ যখন কিশোর বিশ্বজিৎকে হত্যা করল, কই সেদিন তো আমরা ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরকে কোনো স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দিতে দেখলাম না। তখন তারা নিশ্চুপ থাকল কেন? যখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল বানের পানিতে ভেসে গেল, সেখানে তো শুধু মুসলমানের বাড়ি ভাসেনি, হিন্দুদের বাড়িও ভেসে গেছে। সেদিন তো ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের মায়া-দয়া দেখলাম না। চিন্ময় বাংলাদেশি নাগরিক। সে অপরাধ করুক বা না করুক, আদালত সেটা দেখবে। আপনাদের এত আগ্রহ কেন? জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দুই হাজারের মতো শিশু, তরুণ, কিশোরকে নির্বিচার হত্যা করল যে শেখ হাসিনা, তাঁকে আপনারা সেখানে আশ্রয় দিলেন। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে আপনারা পার পাবেন না। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।’

চিন্ময় কৃষ্ণ গ্রেপ্তারের ঘটনায় শেখ হাসিনা কুমিরের কান্না করছেন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে শেখ হাসিনা অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে তাঁর মুক্তি দাবি করে একটি স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। মুগ্ধর মতো একটা তারুণ্যদীপ্ত ছেলে, তাঁর আরেক সতীর্থ গুলি খাচ্ছে, তার মধ্যে বলছে, “পানি লাগবে পানি।” আপনি কি সেই মুগ্ধকে হত্যা করতে পারেন? রংপুরের আবু সাঈদের বুকে পুলিশ দিয়ে গুলি করে তাঁকে হত্যা করতে পারেন? আর আজ চিন্ময় গ্রেপ্তার হয়েছে বলে আপনি কুমিরের কান্না কাঁদছেন। “ক্রোকোডাইল টিয়ারস” আপনার চোখ দিয়ে পড়ছে। এইটার জন্য আপনি কি পুরস্কার পাবেন ভারতের কাছ থেকে?’

সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িবহরে দুর্ঘটনার বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ সারজিস ও হাসনাতের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, তাঁরা বলেছে, “এখানে ইসকনের সংযোগ থাকতে পারে।” এগুলো কিসের আলামত? এগুলো কী ঘটনা ঘটছে? আপনারা কি মনে করছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে আপনারা পার পেয়ে যাবেন। ১৮ কোটি মানুষের দেশে অস্থিতিশীল করে আপনারা কিছু করতে পারবেন না। এ দেশের মানুষ সচেতন। এ দেশের মানুষ যুদ্ধ করে তাঁদের স্বাধীনতা এনেছে। দেশকে বাঁচাতে কীভাবে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে হয়, সেটা এ দেশের মানুষ জানে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলিম, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক এনামুল হক, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাছানাত আলী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।