রায় ঘোষণার পর এক আসামিকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে
রায় ঘোষণার পর এক আসামিকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে

২০ বছর আগের খুনের মামলায় দুই আসামির ফাঁসির আদেশ

২০ বছর আগে চট্টগ্রাম নগরে একই পরিবারের তিনজনকে গুলি করে খুনের মামলায় দুজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন আবুল কাশেম ও মো. ইউসুফ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ কামাল হোসেন শিকদার এই রায় দেন।
সরকারি কৌঁসুলি এম এ ফয়েজ প্রথম আলোকে বলেন, আদালত দুই আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২৯ জুন নগরের বায়েজীদ বোস্তামী থানার কুলগাঁও এলাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে সাইফুল আলম ওরফে ছোট সাইফুল, তাঁর ভাই মোহাম্মদ আলমগীর ও বোন মনোয়ারা বেগমকে হত্যা করা হয়। পরদিন সাইফুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে বায়েজীদ বোস্তামী থানায় মামলা করেন। মামলায় কাশেম ও ইউসুফ ছাড়াও মো. নাছির ওরফে গিট্টু নাছির এবং ফয়েজ মুন্নাকে আসামি করা হয়। পরের বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি এই চারজনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়। এতে বলা হয়, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এসে একই পরিবারের তিনজনকে খুন করা হয়। ইতিমধ্যে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্না। ২০১৭ সালের ৫ জুলাই আসামি কাশেম ও ইউসুফের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন।

আদালতের আদেশে সন্তুষ্ট বলে জানান, মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী আয়েশা আক্তার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালতেও যেন এই রায় বহাল থাকে। প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার দুই আসামি এত দিন জামিনে ছিলেন। গতকাল বুধবার এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। আদালত আসামিদের জামিন বাতিল করে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। আজ রায় ঘোষণার আগে তাঁদের কারাগার থেকে আদালত আনা হয়।

এ দিকে আলোচিত এই খুনের মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য দুই আসামি কাশেম ও ইউসুফ ২০১১ সালে আদালতে আবেদন করেছিলেন। রাজনৈতিক বিবেচনায় তাঁদের নাম প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করা হয়। কিন্তু আদালত মঞ্জুর করেননি। এরপর ২০১৩ সালে আবার আবেদন করা হয়। আদালত নাকচ করে দেন। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন সরকারি কৌঁসুলি এম এ ফয়েজ।

মামলাটি প্রত্যাহারে মন্ত্রণালয় প্রথম চিঠি পাঠায় ২০১১ সালের ২৫ জুলাই। তখন পিপি আদালতে আবেদন জানালে তা নামঞ্জুর করেন বিচারক। এরপর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলতে থাকে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, কাশেম নিজেকে জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে মামলাটি প্রত্যাহারে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আবেদন করেন ২০১০ সালে। এতে সুপারিশ করেন সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগের নেতা ইনামুল হক দানু।