পিরোজপুর সদর উপজেলার বটতলা এলাকায় নৌকার সমর্থকদের হামলায় আহত লালন ফকির (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
লালন ফকির পিরোজপুর পৌরসভার মধ্য ডুমুরিয়া মহল্লার আবদুল হান্নান ফকিরের ছেলে। তিনি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের কর্মী ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় পিরোজপুর সদর উপজেলার রানীপুর গ্রামের বটতলা এলাকায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের একটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের কর্মীরা। এ ঘটনার জের ধরে শ ম রেজাউল করিমের ১০ থেকে ১২ জন সমর্থক এ কে এম এ আউয়ালের কর্মী লালন ফকিরের ওপর হামলা করেন।
হামলায় লালন ফকিরের ডান পা, হাত ও বুকে জখম হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা উদ্ধার করে লালন ফকিরকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই রাতে তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। লালন ফকিরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজমির হোসেন মাঝি বলেন, নৌকার সমর্থক বাবু শেখের নেতৃত্বে লালন ফকিরকে কুপিয়ে জখম করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় লালন ফকির ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মারা গেছেন। নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় কোনো ভাঙচুর করা হয়নি। তাঁরা নিজেরা ভেঙে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের ওপর দোষ দিচ্ছেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আমার নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে, এরপর আবার কার্যালয়ের সামনে এসে আমাকে গালাগালি করার সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় লালন ফকির আহত হন। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।’
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান সোমবার রাত সাড়ে আটটায় বলেন, লালন ফকির নামের একজনের ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে হত্যা মামলা নেওয়া হবে।
পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানি) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল।
এ বিষয়ে এ কে এম এ আউয়ালের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। রাতে শহরে মিছিল করে আউয়ালের অনুসারীরা।