নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে পুলিশি পাহারায় গণসংযোগ করেছেন সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের আম্বরখানা এলাকায় তিনি এ প্রচার চালান। এ সময় তিনি সবাইকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর আচরণবিধিমালার ১৪ (২) ধারা অনুযায়ী, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাঁর নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্য সরকারি সুবিধাভোগ করতে পারবেন না।
আচরণবিধিতে আরও বলা আছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে আছেন প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলের নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাঁদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টা ৫৩ মিনিটে আম্বরখানা এলাকায় গণসংযোগে আসেন এবং বেলা সোয়া ১১টার দিকে চলে যান। এ সময় তাঁর সামনে ছিল সিলেট মহানগর পুলিশের একটি গাড়ি। প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি ওই এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করে নৌকা প্রতীকে ভোট চান। গণসংযোগ চলাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে-পেছনে পুরোটা সময় পুলিশের পাহারা ছিল।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘তথ্যটি জানলাম। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আম্বরখানা এলাকায় গণসংযোগকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ও সহসভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশফাক আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছালেহ আহমদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পুলিশের প্রটোকল নিয়ে গণসংযোগ চালানোর বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ফয়জুল আনোয়ার আলাওর বলেন, ‘তারা (পুলিশ) আমাদের না জানিয়ে এসেছে। তাদের আমরা না করে দিয়েছি। এরপর পুলিশ চলে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পুলিশ প্রটোকল দেওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
পুলিশ প্রটোকল দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করে সিটিএসবি। জানতে চাইলে সিলেট মহানগরের উপকমিশনার (সিটিএসবি) ইমাম মোহাম্মদ শাদিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রী নির্বাচনী কাজে পুলিশ প্রটোকল পান না। তিনি প্রটোকল চানওনি। যেহেতু সম্প্রতি (গত শনিবার) মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং আজ বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ছিল, সে কারণে উনার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই সেখানে পুলিশ ও ডিবির একটি দল গিয়েছিল। এটা উনার প্রটোকল ছিল না। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রটেকশন ছিল, প্রটোকল নয়।’