চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের এক কিলোমিটার উত্তরে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কোনো লাইনম্যান ছিলেন না। সড়কের ওপর লেভেল ক্রসিংয়ে ছিল না সিগন্যাল। এ কারণে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই রেললাইনের ওপর উঠে যায় মাইক্রোবাসটি। এতে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হন মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী। আজ শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বেলা তিনটার দিকে ওই ট্রেনের যাত্রী মো. কলিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের দিকে চলে যাচ্ছিল। বৃষ্টিও পড়ছিল। সড়কের লেভেল ক্রসিংয়ে সিগন্যাল বা প্রতিবন্ধক ছিল না। লাইনম্যানও ছিলেন না। ফলে কোনো বাধা ছাড়াই মাইক্রোবাসটি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। তখন মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা লাগে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খৈয়াছড়া ঝরনা পর্যটনকেন্দ্র থেকে গোসল করে ফেরার পথে মাইক্রোবাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ট্রেনটি ধাক্কা দেওয়ার পর মাইক্রোবাসটিকে প্রায় এক কিলোমিটার ঠেলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসে মোট ১৫ আরোহী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজন সুস্থ আছেন। ট্রেন ধাক্কা দেওয়ার সময়ই তিনি লাফিয়ে মাটিতে পড়ে যান।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হতাহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে বড়তাকিয়া রেলস্টেশনে রেখেছেন। তাঁদের নাম-পরিচয় এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম-ঢাকা রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ট্রেনটি ছিল মহানগর প্রভাতী।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেন ওই মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা গেছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন তিনজন। হতাহত ব্যক্তিদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজার এলাকায় বলে জানা গেছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনসার আলী প্রথম আলোকে বলেন, লাইনম্যান না থাকার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি ওই সময় লাইনম্যান না থাকেন, তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।