জনপ্রতিনিধিদের কাছে সাড়া না পেয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার

এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্বেচ্ছাশ্রমে আধা কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছে। গতকাল কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার টাপুরচরে
ছবি: প্রথম আলো

আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গা ভাঙাচোরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে পানি জমে। এ কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় পাঁচ গ্রামের মানুষকে। গ্রামীণ রাস্তাটি সংস্কারের বরাদ্দ চেয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলেও প্রতিকার হয়নি। তাই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এলেন এলাকাবাসী। নিজেরাই নেমে পড়লেন রাস্তা সংস্কারের কাজে।

রাস্তাটির অবস্থান কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নে। সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম করীম হোসেনের বাড়ি থেকে আবদুস ছবুরের বাড়ি পর্যন্ত আধা কিলোমিটার অংশ গতকাল শনিবার স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করেছেন স্থানীয় মানুষ।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দক্ষিণ টাপুরচর গ্রাম থেকে রাস্তাটি বন্দবেড় ইউনিয়ন হয়ে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত চলে গেছে। রাস্তাটি দিয়ে দক্ষিণ টাপুরচর গ্রাম ছাড়াও পুড়ারচর, নলবাড়ি, বাঞ্চারচর ও বাগুয়া গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এ ছাড়া টাপুরচর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাঞ্চারচর দাখিল মাদ্রাসাসহ আরও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও জেলা শহরে যাতায়াতকারী ব্যক্তিরা চলাচল করেন। দীর্ঘদিন খানাখন্দে কাদা-পানি জমা রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ নিরসনে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি সংস্কারে কাজ করেন।

পাঁচ গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করেন

গতকাল সকাল ১০টার সরেজমিন দেখা যায়, টাপুরচর গ্রামের নানা বয়সের মানুষ প্রখর সূর্যতাপ উপেক্ষা করে কোদাল ও ডালি নিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজে লেগে পড়েছেন। রাস্তার পাশের উঁচু জমি থেকে মাটি ও দূর থেকে বালু ট্রাক্টরে করে এনে রাস্তায় তৈরি হওয়া ছোট ছোট গর্ত ও খানাখন্দে ফেলা হচ্ছে। কাজ তদারক করছেন আবু হানিফ মাস্টার ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সামছুদ্দোহা।

রাস্তার সংস্কারকাজ করতে আসা ইদ্রিস আলী মণ্ডল (৪২) জানান, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় গর্ত হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় কাদা-পানি জমে যায়, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিভিন্ন সময় বলেও সংস্কার না হওয়ায় এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে সংস্কারে নেমেছেন।

আবু হানিফ মাস্টার বলেন, রাস্তাটি বেশ পুরোনো। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সংস্কার করা হলো। এতে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সামছুদ্দোহা বলেন, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে গেলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। আজ এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতেই রাস্তাটির আধা কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে।