খুলনার পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাব ‘দখলে’ নিয়ে টাঙানো হয়েছে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় লেখা ব্যানার। সোমবার দুপুরে নগরের শান্তিধাম মোড় এলাকায়
খুলনার পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাব ‘দখলে’ নিয়ে টাঙানো হয়েছে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় লেখা ব্যানার। সোমবার দুপুরে নগরের শান্তিধাম মোড় এলাকায়

পঞ্চবীথি ক্লাব দখলের অভিযোগ

গণ অধিকার পরিষদ খুলনা মহানগরের সম্পাদককে অব্যাহতি

খুলনা নগরের পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কার্যালয় ভবন দখলের অভিযোগে গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রাশেদুল ইসলাম খুলনায় এস কে রাশেদ নামে পরিচিত। গণ অধিকার পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গণ অধিকার পরিষদ, খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় জ্বালানি–বিষয়ক সহসম্পাদক এস কে রাশেদকে দলীয় গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে শাকিল উজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই গণ অধিকার পরিষদ সব সময় দখল, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এসেছে। দলের কেউ যদি এ ধরনের কাজে যুক্ত থাকেন, তাঁকেও দল কখনো প্রশ্রয় দেয় না। এ কারণে দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় শেখ রাশেদুল ইসলামকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দুপুরের দিকে নগরের শান্তিধাম মোড় এলাকায় অবস্থিত পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাবের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা। পরে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের সাইনবোর্ডের জায়গায় ‘গণ অধিকার পরিষদ, খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়’ লেখা একটি ব্যানার টানিয়ে দেন তাঁরা।

এ বিষয়ে গতকাল প্রথম আলো অনলাইনের ‘খুলনায় ক্লাব “দখলে” নিয়ে টানানো হলো গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের ব্যানার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

শান্তিধাম মোড়ে অবস্থিত পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাবটি যে ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো, সেটি মূলত গণপূর্তের একটি দ্বিতল ভবন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের কার্যক্রম চলত। আর নিচতলায় রয়েছে আরও কিছু কার্যালয়। ২০১০ সালের দিকে গণপূর্ত থেকে নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়ে আসে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র। এরপর প্রায় ১৪ বছর ধরে সেখানে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কর্মকর্তারা।

তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ ও ব্যানার টানিয়ে দেওয়ার ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শেখ রাশেদুল ইসলাম। ওই সময় তিনি স্থানীয় এক গণমাধ্যমের ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘আমাদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল, এখানে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের অবৈধ কার্যক্রম চলত। এখানে জুয়া খেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। ৫ আগস্টের পর এসব অভিযোগের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ক্লাবটি অবৈধভাবে জায়গাটি দখল করে আছে। এরপর আমরা আমাদের প্রক্রিয়ায় তাদের উচ্ছেদের জন্য বারবার করে বলেছি। তারা সরবে না বিধায় আমরা স্থানীয় ও আরও যেসব রাজনৈতিক দল আছে, সবাইকে বলে আমরা এটাকে উচ্ছেদ করার জন্য আজ এসেছি। এখানে যেন কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ না হয়, সে জন্য আমরা আজ থেকে এখানে পাহারায় থাকব।’

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারিভাবে বরাদ্দ নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে সেখানে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তাঁরা। ছয় মাস ধরে ক্লাবটি তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। সেখানে যদি কোনো অনৈতিক কার্যক্রম চলত, তাহলে সাধারণ মানুষের সেটা জানার কথা। তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।