কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আবার তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, যা গতকাল বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। হঠাৎ এক রাতে ২৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়ায় তিস্তাপারের বাসিন্দারা বন্যার আশঙ্কা করছেন।
এদিকে টানা চার দিন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি-হ্রাস অপরিবর্তিত থাকলেও আজ পানি কমে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের চর গোড়াই পিয়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কিস্তি কিস্তি বান আসপের নাগছে। নিচু জমি তলে গিয়ে ঘাস মরি গেইছে। ঘরে হামার খাওয়ার চাল নাই। গরু–ছাগলের জন্য খড়–ভুসি কিনমো ক্যাদোন করি।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রামের ধরলা নদী, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ব্রহ্মপুত্র নদ অববাহিকায় উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেগমগঞ্জ, সাহেবের আগলা ও নয়ারহাট ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আগামী দুই দিন স্থিতিশীল থেকে চরাঞ্চলগুলো সাময়িক প্লাবিত হতে পারে। এদিকে তিস্তা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পেলেও বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই।
তিস্তাপারের বাসিন্দারা জানান, গতকাল বুধবার বিকেল থেকে তিস্তা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে নদীর তীরবর্তী নিচু চরাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গবাদিপশুর চারণভূমি তলিয়ে যাচ্ছে। এভাবে পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে আবার তিস্তাপারে বন্যা দেখা দেবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোসারফ হোসেন বলেন, দুই দফায় বন্যা হওয়ায় জেলায় ৪২৫ একর গবাদিপশুর চারণভূমি প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার ৯টি উপজেলায় খামারি ও কৃষকপর্যায়ে প্রায় আড়াই লাখ গবাদিপশু নিয়ে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। প্রাথমিকভাবে ২৫ মেট্রিক টন তৈরি খাবারের চাহিদা জেলা প্রশাসন বরাবর পাঠানো হয়েছে। আরও বরাদ্দ পেলে বন্যাকবলিত চরাঞ্চলের কৃষক ও খামারিদের মধ্যে তা সরবরাহ করা হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পেলেও এখনো বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচে আছে। তিস্তা নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।