দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে এবার তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান। রোববার বিকেলে তিনি ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।
এর আগে গত শনিবার তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। তিনি দলটির প্রাথমিক সদস্যপদ লাভ করেছেন। মাইনুল হাসান রোববার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোর কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ছয়বারের আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। গত ৫ নভেম্বর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই উপনির্বাচনে মাইনুল হাসান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন। তখন তিনি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ লাভ করেছিলেন।
মাইনুল হাসান বলেন, ‘গত ৫ নভেম্বরের উপনির্বাচনের আগে আমি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নিয়েছিলাম। নির্বাচন করতে গেলে তো কোনো পদ নিতেই হয়। তবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কোনো পদে ছিলেন না। এখন তৃণমূল (তৃণমূল বিএনপি) থেকে নির্বাচন করার জন্য এ দলের প্রাথমিক সদস্যপদ নিয়েছি। দু-এক দিনের মধ্যে দলের (তৃণমূল) কোনো পদে যাব।’
নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপিকে আওয়ামী লীগ কোনো ছাড় দেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমনটি হতেও পারে। তবে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার না। আশা করছেন, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান এমন একটি সিদ্ধান্ত নেবেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত এবং হাওরবেষ্টিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দুবার স্বতন্ত্র এবং চারবার বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। চারদলীয় জোটের আমলে (২০০১-০৬) তিনি টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘ ২৭ বছর জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নামেন। ২৯ ডিসেম্বর বিএনপি থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলার ছড়ি) হিসেবে তিনি ওই নির্বাচনে বিজয়ী হন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান। গত ৫ নভেম্বর এ আসনে পুনরায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির টানা দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা। তবে নির্বাচনে ভোট কারচুপি অভিযোগ রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি সরাইল উপজেলার ৯টি এবং আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। বর্তমানে মোট ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২।