শেরপুরে অপহরণের ৭ দিন পর মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় কলেজছাত্র সুমন মিয়ার (১৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাড়ির উঠান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সুমন শেরপুর পৌরসভার কসবা বারাকপাড়া (নিমতলা) এলাকার রাজমিস্ত্রি মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। সে শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। ৪ নভেম্বর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন শেরপুর শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকার মো. আজিম উদ্দিন, তাঁর মেয়ে আন্নি আক্তার (১৯) এবং শহরের সজবরখিলা এলাকার ফোরকান আলীর ছেলে মো. রবিন মিয়া (১৯)।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, কলেজছাত্র সুমনকে অপহরণের ঘটনায় তার বাবার করা অভিযোগটি গত রোববার সদর থানায় এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত হয়। পুরো ঘটনা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে। মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহে পাওয়া গিয়েছিল। এর সূত্র ধরে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেখানো জায়গায় মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, প্রথমে মামলার আসামি আন্নি ও তাঁর বাবাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও সুমনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গতকাল রাতে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি (রবিন) সুমনকে মেরে শহরের সজবরখিলা এলাকায় তাঁর বাড়ির উঠানে লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তাঁকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে মাটি খুঁড়ে সুমনের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা নৃশংসভাবে খুন করছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে সুমনের লাশ গলিত অবস্থায় ছিল। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আন্নি আক্তার ও তাঁর বাবা আজিম উদ্দিনকে গতকাল বিকেলে আদালতের নির্দেশে জামালপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।