টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পুলিশের তৎপরতা না থাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ দায়িত্ব পালন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ দেয়ালে দেয়ালে লিখছেন নানা স্লোগান। এসব দেয়াললিখনের মাধ্যমে সমাজের বৈষম্য নিরসন ও আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করছেন তাঁরা।
আজ শনিবার সকালে মির্জাপুর বাইপাস ও পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা যানজট নিরসনে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। মির্জাপুর বাজারে রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল সচল রেখেছেন। মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় থামলেও বেশি সময় নিতে দেওয়া হচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে দেয়াল লিখনের সময় কথা হয় মির্জাপুরের মা ফাতেমা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শেখ মেহেনাজের সঙ্গে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত মুগ্ধর (গত ১৮ জুলাই নিহত) স্মরণে দেয়ালে লিখছিলেন—‘পানি লাগবে, পানি?’ মেহেনাজ বলেন, ‘আমাদের ভাইবোনেরা দেশ নতুন করে সাজানোর জন্য আন্দোলন করছে। প্রতিবাদী এই আন্দোলনে যেসব ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের স্মরণে আমরা দেয়ালে লিখছি।’
গোড়াই এলাকার বাসিন্দা ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শারেজুম মনিরা বলেন, ‘আমরা আমাদের বাংলাদেশ নতুনভাবে স্বাধীন করতে পেরেছি। সবাই একসঙ্গে হাতে হাত রেখে দেশের পতাকা ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।’
আন্দোলনের সফলতাকে দ্বিতীয় বিজয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির শিক্ষার্থী মির্জা আশিক বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই আন্দোলনে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ ছিল। আমরা দেয়ালে সবাই হাতের ছাপ দিয়ে জাতীয় পতাকা এঁকেছি। আন্দোলনে সবার অবদান আছে। আমরা সবাই একাত্মতা প্রকাশ করেছি। এই স্বাধীনতার মাধ্যমে সার্বভৌমত্ব রক্ষার চেষ্টা করছি।’
আন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাইদের ছবি আঁকা হয়েছে মির্জাপুর আন্ডারপাসের দেয়ালে। বাংলাদেশের মানচিত্রের মধ্যে তাঁকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেয়ালচিত্র অঙ্কনে অংশ নেওয়া ইমরান সিদ্দিকী জানান, ‘সাইদ আমাদের শক্তি। তাঁর সাহসে আমরা অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম। আমাদের আন্দোলন সার্থক হয়েছে। সফল হয়েছে। তিনি যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন; আমরা এবার তা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি।’