গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকে থেকে রোগী মৃত্যুর ঘটনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে ‘লিফটে আটকে পড়া রোগীসহ লোকজন দরজা ধাক্কাধাক্কি করায় লিফটের দরজার নিরাপত্তাব্যবস্থা কাজ করেনি’ বলে দাবি করা হয়েছে।
গতকাল রোববার বিকেলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিঠিটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। চিঠিতে সই করছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-১০ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল হালিম।
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, লিফটে রোগীসহ অন্যরা ৪৫ মিনিট নয়, মাত্র ১০-১৫ মিনিট আটকে ছিলেন।
আজ সোমবার সকালে চিঠির বিষয়ে জানতে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রওশন এন্টারপ্রাইজের সরবরাহকৃত মোভি ব্র্যান্ডের একটি লিফট গতকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে নবম ও দশম তলার মাঝামাঝি রোগী ও রোগীর দর্শনার্থীসহ হঠাৎ আটকে যায়। প্রাথামিকভাবে লিফটটি বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের জন্য আটকে গেলে এআরডি (অটোমেটিক রেসকিউ ডিভাইস) কাজ করার জন্য এক মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু লিফটে আটকে পড়া রোগীসহ লোকজন দরজা ধাক্কাধাক্কি করায় লিফটের দরজার নিরাপত্তা কাজ করেনি।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘পরবর্তী সময়ে লিফট অপারেটর লিফট মেশিন রুমে হাত দিয়ে ম্যানুয়ালি লিফটটি একটি ফ্লোরে আনার আগেই রোগীসহ লোকজন দরজা খুলে বের হয়ে আসেন। এসব কাজ সম্পন্ন হতে ১০-১৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হয়। হার্টের রোগী ছিলেন। তাৎক্ষণাৎ রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
মাঝপথে ত্রুটি দেখা দেওয়া লিফটটি আগে থেকে ত্রুটিপূর্ণ ছিল না দাবি করে চিঠিতে বলা হয়েছে, লিফটটি নিয়মিত সার্ভিস ও মেইনটেন্যান্স করা হয়। বর্তমানে লিফটি চালু আছে। আটকে পড়া রোগীসহ অন্যরা দরজায় ধাক্কাধাক্কি করায় লিফটির সমস্যা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে চিঠিতে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য গণমাধ্যমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, রোগী ৪৫ মিনিট লিফটে আটকা পড়ে ছিলেন বলে যে তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে, সেটি সঠিক নয়।
গতকাল হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ (৫০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিগাঁও গ্রামের শরীফ উদ্দীনের স্ত্রী।
এর আগে ৩ মে একই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী হাসপাতালের ১২ তলা থেকে পড়ে মারা যান। ওই রোগীর নাম জিল্লুর রহমান (৭০)। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া এলাকার কাসেম আলীর ছেলে।