লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের উপস্থিতিতে সমাবেশে বিপুল ভোটে নৌকাকে হারানোর বক্তব্য দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা। সমাবেশটি ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার এ বক্তব্যও ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও ওই নেতা দাবি করেছেন, নৌকাকে হারানোর কথা ‘অসাবধানতায়’ বলে ফেলেছেন।
আদিতমারীর দুর্গাপুরের ভাদাই জিএস স্কুলমাঠে বুধবার রাতে এ সমাবেশ হয়। নৌকাকে হারানোর বক্তব্য দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতার নাম মো. আসাদুজ্জামান নান্নু ওরফে ভুট্টা নান্নু। তিনি আদিতমারীর দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘ইনশা আল্লাহ আমি আল্লাহর কাছে আশা রাখি, আমি দুর্গাপুর চেয়ারম্যান বলছি, আমি ভুট্টা নান্নু হিসেবে পরিচিত। আমরা বিপুল ভোটে নৌকাকে পরাজিত করব বলে আমি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আশা করছি।’
ভিডিওতে ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নুর উদ্দেশে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি বলেন, দুর্গাপুর ইউনিয়নে বিপুল ভোটে নৌকাকে ফার্স্ট (প্রথম) করবেন।’ কিন্তু চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপরীত কথা বলে বক্তব্য শেষ করেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন নৌকা মার্কার প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। অপ্রত্যাশিত বক্তব্য দেওয়া দ্রুত আসাদুজ্জামান নান্নুকে সমাবেশের মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
বুধবার রাতেই আসাদুজ্জামান ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করেন। এতে তিনি বলেন, ‘আমি ভুলবশত ওই বক্তব্য দিয়েছি। আমি বক্তব্যের সংশোধনী দিচ্ছি। আমার বক্তব্য হলো আমার ওখানে (দুর্গাপুরে) স্বতন্ত্র প্রার্থীকে (লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল হককে) বিপুল ভোটে (ব্যবধানে) পরাজিত করা হবে।
প্রথম আলোকে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নৌকা মার্কার ওই সমাবেশে আমার বক্তব্যে আমি বেশ কয়েকবার নৌকাকে জয়ী করার কথা বলেছি। তবে বক্তব্যের শেষ দিকে অসাবধানতার জন্য ওই কথা বলেছি। এ জন্য আমি বিব্রত ও দুঃখিত। আমি নৌকা মার্কার কর্মী ও সমর্থক। আমাদের ইউনিয়নে (দুর্গাপুরে) স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হকের বাড়ি, তারপরও নৌকার প্রার্থীকে এ ইউনিয়নে বিপুল ভোটে বিজয়ী করব ইনশা আল্লাহ।’
এই আসনে নৌকার প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল হকের বাড়ি আদিতমারীর দুর্গাপুরে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছোট ভাই, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ও আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে জনসংযোগ করছেন।
এ আসনে নৌকা মার্কার নুরুজ্জামান আহমেদ ও ঈগল মার্কার সিরাজুল হকের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস রয়েছে। এ ছাড়া আসনটিতে জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র মমতাজ আলীসহ সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।