গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

গুচ্ছ থেকে বের হতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম

সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি মানলে সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে প্রথমে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তাঁরা উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলীর সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন।

তবে উপাচার্যের কাছে আশানুরূপ আশ্বাস পাননি দাবি করে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে গুচ্ছবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এসব কর্মসূচি করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নেওয়া হবে। এরপর ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইঙ্গিত দেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতেই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে। সর্বশেষ সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুটি পক্ষ।

আজকের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীকে বলতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে গুচ্ছ পদ্ধতি বহাল রেখে যদি আপনারা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চান, আমরা আপনাদের রুখে দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত। সর্বোপরি আমরা চাই, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এই বছর থেকে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সেশন থেকে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে যাবে।’

আরেক শিক্ষার্থী পাবেল রানা বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতি স্বৈরাচারী হাসিনার বন্দোবস্ত। এই স্বৈরাচারীর বানানো গুচ্ছে তাঁরা থাকবেন না। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থাকল অথবা থাকল না, তাতে তাঁদের কিছুই আসে-যায় না। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকেরা তাঁদের সঙ্গে আছেন। তাঁরা চলতি বছর থেকেই গুচ্ছমুক্ত হতে চান।

যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন কেউ চান না, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে থাকুক। সবার মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁরা গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গুচ্ছে থাকতে তাঁদের একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন অন্তত এ বছর গুচ্ছে থাকার জন্য। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন। শিগগিরই এ নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা হবে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।