রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলের কক্ষ থেকে নামিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে দিবাগত রাত দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আবদুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান কয়েক দিন আগে তাফকিফ আল তৌহিদকে নবাব আবদুল লতিফ হলের দায়িত্ব দেন। তিনি ওই হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। গতকাল রাত আটটার দিকে তৌহিদ এক জুনিয়র কর্মীকে হলে আসন দেওয়ার জন্য নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী বিবেক সাহাকে হলের ৩২২ নম্বর কক্ষ থেকে থেকে নামিয়ে দেন। এ সময় বিবেক সাহাকে কক্ষ থেকে বের করতে বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকারের অনুসারী।
বিষয়টি নিয়ে তাফকিফ আল তৌহিদ ও শামীমের মধ্যে বাক্বিতণ্ডা হয়। এ সময় শামীম ও তাঁর নেতা-কর্মীরা হলে দেশি অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের শতাধিক অনুসারী হলের সামনে জড়ো হয়ে মহড়া দেন। এ সময় তাঁদের হাতে বাঁশ, লোহার রড ও পাইপ দেখা যায়। একপর্যায়ে শামীমের অনুসারীরা হলের ভেতরে অবস্থান নেন এবং সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা হলের বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় ঘটনাস্থলে দেশি অস্ত্রের কয়েকটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দিবাগত রাত ১২টার দিকে সভাপতি-সম্পাদক হলে গিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে তাঁরা রাত দেড়টার দিকে হল থেকে বের হন। আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব হল গেটে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশে বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে কোনো ভুল–বোঝাবুঝি হলে আগে আমাদের জানাতে হবে। যেকোনো সমস্যা দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’ তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে আহ্বান জানান।
ঘটনার বিষয়ে শামীম হোসেন বলেন, তাঁর কর্মী বিবেক সাহা হলের আবাসিক ছাত্র। তাফকিফ আল তৌহিদ যে ছেলেকে হলে তুলেছেন, তিনি অনাবাসিক ছাত্র। সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা হল গেটে সাটানো তাঁর ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন। পরে আলোচনা করে বিষয়টি সাময়িক সমাধান করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে একটু ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। দেশি অস্ত্রশস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।