বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর (পোস্তগোলা) সংস্কারকাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু এ কাজ চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। সংস্কারকাজের সময়টায় ওই সেতুতে ভারী যান চলাচল একেবারে বন্ধ থাকবে। এ কারণে সকাল থেকে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় (বাবুবাজার) সেতু ও কদমতলী এলাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বাবুবাজার সেতুতে থেমে থেমে চলছে যানবাহন।
সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খান জানান, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর দুটি গার্ডারের মেরামত ও ‘রেট্রোফিটিং’ কাজ করা হবে। এই মেরামতকাজ ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করা হলেও এসএসসি পরীক্ষার জন্য তা পরিবর্তন করা হয়। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত সেতুর মেরামত করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এ সময় সেতুটি দিয়ে ট্রাক-পিকআপ ভ্যান, কাভার্ড ভ্যান, কনটেইনারবাহী লরিসহ সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
কেরানীগঞ্জের বাবুবাজার সেতু এলাকায় দেখা যায়, সকাল থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ের কেরানীগঞ্জ সংযোগ সড়ক থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলো যানজটের কারণে থমকে আছে। দীর্ঘ সময় পর যানবাহন কিছুটা এগোচ্ছে। এতে সেতু ও সড়কে যানজট দেখা দেয়। দুপুর থেকে সেতুর ওপর থেমে থেমে যান চলাচল দেখা যায়।
মিরপুর থেকে ছেড়ে আসা ফরিদপুরের ভাঙ্গাগামী স্বাধীন পরিবহনের চালক রমজান আলী বলেন, এমনিতেই সব সময় বাবুবাজার সেতুতে যানজট থাকে। এ সেতুটি পার হতে মাঝেমধ্যে ঘণ্টাখানেক সময় চলে যেত। আর এখন পোস্তগোলা সেতু বন্ধ থাকায় এ সেতুতে যানজট আরও বেড়েছে। থেমে থেমে গাড়ি চালাতে হয়। এতে অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে।
গুলিস্তানগামী দিশারী পরিবহনের যাত্রী রনি তালুকদার বলেন, ‘আমি রাজধানীর পল্টন এলাকায় ব্যাগের দোকানে চাকরি করি। যাতায়াতের সময় বাবুবাজার সেতু ও তাঁতীবাজার দীর্ঘক্ষণ জ্যামে বসে থাকতে হয়। এর মধ্যে পোস্তগোলা সেতু বন্ধ থাকায় বাবুবাজার সেতুতে যানজট আরও বেড়েছে। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর গাড়ি একটু আগায়।’
কেরানীগঞ্জের কালিন্দী এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, ‘পুরান ঢাকার নয়াবাজার যাব। অনেকক্ষণ ধরে কদমতলী এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকার পরও যানবাহন পাচ্ছি না। সেতুতে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় পায়ে হেঁটে রওনা দিচ্ছি।’
এদিকে বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর (পোস্তগোলা) মাঝপ্রান্তে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর দুটি গার্ডারের মেরামত ও রেট্রোফিটিং কাজ করা হচ্ছে। এ সময় সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। উভয় প্রান্ত থেকে আসা সব ধরনের যানবাহন সেতুতে প্রবেশ করতে না পেরে বিকল্প পথে চলে যাচ্ছে।
বরিশালগামী ইমাদ পরিবহনের চালক আজমত আলী বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পোস্তগোলা এলাকায় গিয়ে দেখি যান চলাচল বন্ধ। পরে বাধ্য হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে বাবুবাজার সেতু পার হয়েছি। কিন্তু কদমতলী ও নয়াবাজার এলাকায় যানজট থাকায় অনেক সময় নষ্ট হয়েছে।’
কদমতলী ও বাবুবাজার সেতু এলাকায় যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানালেন কদমতলী এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সকাল দিকে ঢাকাগামী যানবাহনের চাপ থাকলেও দুপুর পর থেকে চাপ কিছুটা কমে গেছে। সেতুতে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা কদমতলী এলাকা ও সেতু যানজটমুক্ত রাখতে চেষ্টা করছি।’