বরিশাল থেকে ঢাকাগামী এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে গতকাল সোমবার রাতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর এক নারীর লাশ আজ মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নারীর নাম আলো মজুমদার (৩৫)। তিনি পুলিশের এক পরিদর্শকের স্ত্রী বলে জানা গেছে। বরিশাল সদর নৌ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুল আল গালিব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া আলো মজুমদার বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরেরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের মেয়ে। তাঁর স্বামী অনুপ রায় পুলিশের পরিদর্শক। তিনি বর্তমানে পটুয়াখালী জেলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত আছেন।
বরিশাল সদর নৌ থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে বরিশাল নদীবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় এমভি সুন্দরবন-১৬ নামের লঞ্চটি। রাতে এক নারী লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন বলে তারা জানতে পারে। সকালে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরিকাঠি এলাকায় এক নারীর লাশ ভাসমান অবস্থায় আছে বলে পুলিশ জানতে পারে। পরে সেখানে গিয়ে তাঁরা লাশটি উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছেন। সেখানে এসে স্বজনেরা লাশ শনাক্ত করেছেন।
নৌ পুলিশের এসআই আসাদুল আল গালিব বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই নারীর বোন মঞ্জু রানি মজুমদার বলেন, আলো মজুমদার মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বরিশাল নগরের কাশিপুর পাসপোর্ট কার্যালয়ের পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে তাঁরা দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। সোমবার সকালে আলো মজুমদার ফোনে টাকা রিচার্জ করার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এরপর তাঁর কোনো সন্ধান মিলছিল না। এ ঘটনায় বরিশাল নগরের বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল।
পরিবার জানায়, ২০১৫ সালে আলো মজুমদার ও অনুপ রায়ের বিয়ে হয়। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি আলো মজুমদারের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির সিকদার বলেন, মৃত আলো রানী মজুমদারের বড় বোন মঞ্জু রানী মজুমদার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সেখানে তিনি মৃত আলো রানী মজুমদার মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং সোমবার সকাল ১০টায় বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ বলে উল্লেখ করেন। ডিজির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে আজ মঙ্গলবার জানা যায়, ওই নারীর মরদেহ কীর্তনখোলা নদীতে পাওয়া গেছে। তদন্ত ছাড়া নেপথ্যের ঘটনা বলা যাচ্ছে না।