নরসিংদীর বেলাবতে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে ফেসবুক পেজ খুলে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হলে বিচারক পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠান।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম সৈকত হোসেন ভূঁইয়া ওরফে তপু (২৩)। তিনি বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের লাখপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। পুলিশ বলছে, গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বেলাব বাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টের সামনে কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে নেওয়ার সময় সৈকতকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোনও জব্দ করা হয়।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সৈকত দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে এনএসআই কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করছিলেন। তিনি ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিতেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে যাঁরা এনএসআইয়ে চাকরি করতে চান বা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের চাকরির দেওয়ার আশ্বাস দিতেন তিনি। সৈকতের প্রতারণার খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন এলাকার চাকরিপ্রার্থীরা বিকাশের মাধ্যমে তাঁকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছেন। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ফেসবুক আইডি বা মেসেঞ্জার থেকে ওই চাকরিপ্রত্যাশীকে ব্লক করে দিতেন সৈকত। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে প্রতারণা করে এলেও এত দিন তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ জানান, সৈকত একজন ভয়ংকর ‘ডিজিটাল’ প্রতারক। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরেকটি মামলা হয়েছিল।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই যুবক বেলাব বাজারের একটি রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই খবর জানতে পেরে বেলাব থানার উপপরিদর্শক নাঈমুল হক আগে থেকেই সেখানে উৎপেতে ছিলেন। বিকাশে টাকা লেনদেন করার সময়ই নাঈমুল হক হাতেনাতে সৈকতকে আটক করেন।
মামলার বাদী নাঈমুল হক বলেন, আটকের পর তিনি ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে সৈকতের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এই মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে নরসিংদীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিচারক আগামী সোমবার রিমান্ড শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে আসামিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।