যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে অপরাধী চক্র গড়ে তোলার ঘটনার জেরে ছয় কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাঁদের তাৎক্ষণিক বিভিন্ন কারাগারে বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, মহিলা কারাগারের কারারক্ষীর দায়িত্ব পালনকালে দায়িত্বে অবহেলার কারণে গতকাল রোববার (৩০ জুলাই) পাঠানো একটি আদেশে একযোগে ছয়জন কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে। বদলি করা ব্যক্তিদের মধ্যে কারারক্ষী আলেয়া চৌধুরীকে লক্ষ্মীপুর, শাম্মী আক্তারকে সুনামগঞ্জ, মোছা. সোহেলা আক্তারকে ঝালকাঠি, সেলিনা আক্তারকে শেরপুর, ঝর্ণা আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও লাকী আক্তারকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের তাৎক্ষণিক কর্মমুক্তির (স্ট্যান্ড রিলিজ) আদেশে কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান।
জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, মহিলা কারাগারের ছয়জন কারারক্ষীকে বদলির আদেশ কারাগারে পৌঁছালে তাৎক্ষণিক তাঁদের নতুন কর্মস্থলে পাঠানো হয়েছে।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কারণে আলোচিত যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে গ্রেপ্তারের পর গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে রাখা হয়। তিনি অপরাধ কার্যক্রম শুরু করেন কারাগারের ভেতরেও। গড়ে তোলেন অনুগত বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে, কারাগারে বন্দী ও অন্য নারীদের কাছ থেকে তিনি টাকাপয়সা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতেন। তাঁদের ওপর চালাতেন অমানুষিক নির্যাতন। কয়েকজন কারারক্ষী ও নারী বন্দী তাঁর এসব কাজে সহযোগিতা করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঢাকায় আদালতে নথি চুরির অভিযোগে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাঁকে নির্যাতন করা হয়। গত ২৫ জুন ওই নারী আইনজীবীর ভাই গাজীপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাঁর বোনকে নির্যাতনের ঘটনার বিচার দাবি করেন। এই অভিযোগের মাধ্যমে শামীমা নূরের নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ওই ঘটনার পর পাপিয়াকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মহিলা কারাগারের মেট্রন ফাতেমাকে প্রত্যাহার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করে গঠিত তদন্ত কমিটি। সবশেষ কারাগারের ছয়জন কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হলো।