ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর। ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ওই কিশোর পর্নো ভিডিওতে আসক্ত ছিল। ওই কিশোরের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মলেন করে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযুক্ত ওই কিশোরকে গত শনিবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে রোববার ফরিদপুরের ২ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হাসান ওই কিশোরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) খালিদ মাহমুদ বলেন, অভিযুক্ত কিশোরকে শিশু আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগার থেকে যশোরে অবস্থিত শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলেনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ওই কিশোর পর্নো ভিডিওতে আসক্ত ছিল। তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে অনেক পর্নো ভিডিও সংরক্ষিত পাওয়া যায়। কিশোরী গোসল করে পুকুরপাড়ে কাপড় পরিবর্তনের সময় ওই কিশোর দেখে ফেলে। পরে কিশোরীকে পুকুরের পাশে পাটখেতে নিয়ে ধর্ষণ করে ওই কিশোর।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ওই কিশোরী ঘটনাটি তার বাবা-মাকে বলে দেবে বলে জানায়। তখন ওই কিশোর ঘটনাটি কাউকে বলতে মানা করে। কিন্তু কিশোরী তার বাবা-মাকে বলে দেবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এতে ওই কিশোর ক্ষুব্ধ হয়ে কিশোরীর পরনের লাল রঙের সালোয়ার দিয়ে তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে ওই কিশোর বাড়িতে এসে তার বাবাকে বিষয়টি জানায়। তার বাবা তাকে গালমন্দ করেন। পরে তার বাবা ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড আপস) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সদর সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহান শাহ্, ট্রাফিক পরিদর্শক তুহিন লস্কর, ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল-রশিদ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার এসআই খালিদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার বেলা একটার দিকে বাড়ির কাছে একটি পুকুরে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় কিশোরী। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে পুকুরের পাশের একটি পাটখেত থেকে ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত কিশোরীর মা বাদী হয়ে শনিবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ভাঙ্গা থানায় ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে আইনে মামলা করেন। কিশোরীর বাবা একজন দিনমজুর। তার মা মানুষের বাড়িতে কাজ করেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর পুলিশ সুপারের কার্যালয় চত্বরে কথা হয় নিহত কিশোরীর মা ও বাবার সঙ্গে। তাঁরা মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।