তিন বছর রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়নি, অভিযোগ সংসদ সদস্য একরামুলের

নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ডাকে প্রতিবাদ সমাবেশ। আজ শনিবার বিকেলে শহরের আবদুল মালেক উকিল সড়কে দলীয় কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

গত তিন বছর রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। আজ শনিবার বিকেলে এক সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। তবে কারা তাঁকে রাজনীতি করার সুযোগ দেননি, সেটি বলেননি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিএনপির নেতাদের নানা কটূক্তির প্রতিবাদে এ প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করেন একরামুল করিম চৌধুরী। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘একটি শ্রেণি মনে করেছে, আমাকে পদ থেকে সরালে আমার রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আগে আমার যা জনপ্রিয়তা ছিল, এখন তা আরও অনেক বেড়ে গেছে। আমি যত দিন ধরে রাজনীতি করছি, কর্মী-নেতাদের রক্তের বিনিময়ে ভালোবাসা দিয়েছি। আপনার ভালোবাসা দেননি। খাবার সময় একা একা খেয়েছেন।’

একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমার নেত্রীর বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলবেন, তাঁদের কাউকে আমি ছাড় দেব না। আমার নেত্রীকে আর আমার কর্মীকে গালাগালি করা একই কথা। দু-একজন কয়, কে কোথায় গালি দিয়েছে। আমি বলি, বাংলাদেশের যে প্রান্ত থেকেই নেত্রীকে গালি দেওয়া হোক, এক কথা। আমার নেত্রীকে কটূক্তি করা আমি কোনোভাবে বরদাশত করব না।’

সমাবেশে লোকসমাগম নিশ্চিত করতে সদর উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে লোক এনে জড়ো করা হয়। তাঁদের আসা-যাওয়ার জন্য ভাড়া করা হয় ৩৫০টি বাস।

শহরের আবদুল মালেক উকিল সড়কের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সামছুদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক স্পিকার প্রয়াত আবদুল মালেক উকিলের ছেলে ও বিটিভির সাবেক উপমহাপরিচালক বাহার উদ্দিন খেলন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ইমন ভট্ট, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক প্রমুখ।

তবে একরামুল করিম চৌধুরীর ডাকা এ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক, দুই যুগ্ম আহ্বায়ক কিংবা শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতা। এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি এমপির ব্যক্তিগত মিটিং। এর সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। দলের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের মিটিং আহ্বানের কোনো এখতিয়ার তাঁর নেই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তির প্রতিবাদে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর ডাকা প্রতিবাদ সমাবেশে জমায়েত। আজ শনিবার বিকেলে

দলীয় নেতা-কর্মীদের মতে, প্রতিবাদ সমাবেশ বলা হলেও এটি ছিল মূলত সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর জনসমর্থন জানান দেওয়ার একটি বিশেষ উদ্যোগ। সমাবেশে লোকসমাগম নিশ্চিত করতে সদর উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে লোক এনে জড়ো করা হয়। তাঁদের আসা-যাওয়ার জন্য ভাড়া করা হয় ৩৫০টি বাস। সদর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও সেনবাগ উপজেলা থেকেও অনেকে এ প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

একরামুল করিম চৌধুরী ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বরের সম্মেলনেও তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু প্রস্তাবিত কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠার পর ওই কমিটি বিলুপ্ত করে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ৮৭ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়, যাতে একরামুলকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়।