রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে হাতকড়া পরিয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিচ্ছে পুলিশ। আজ দুপুরে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে
রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে হাতকড়া পরিয়ে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিচ্ছে পুলিশ। আজ দুপুরে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে

কুমিল্লায় তরুণকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দুজনের

কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে মো. ফয়সল নামের এক তরুণকে শ্বাসরোধের পর গলা কেটে হত্যার দায়ে দুই তরুণকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন উপজেলার রাজনগর গ্রামের মো. ফুল মিয়ার ছেলে মো. শামীম মিয়া (২৪) ও একই উপজেলার সাফলেজি গ্রামের মো. বেদন মিয়ার ছেলে মো. দুলাল মিয়া (২০)।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ফয়সলের সঙ্গে আসামি মো. শামীম মিয়ার কলেজপড়ুয়া বোনের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি মেনে নেননি শামীম। ২০২০ সালের ৫ জুন ফয়সল তাঁর মামা নজরুল মিয়ার বাড়ির ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর মুঠোফোনে শামীম ফোন করে তাঁকে স্থানীয় আমিরুল ইসলাম উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনে যেতে বলেন। ফয়সল কাউকে কিছু না বলে সেখানে যান। এরপর আর ফিরে না আসায় স্বজনসহ বন্ধুরা খোঁজাখুঁজি করেন। ফয়সলের বাবা মো. মকবুল হোসেন হোমনা থানায় একটি নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে পুলিশ মো. শামীম মিয়াকে আটক করে। শামীম পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, ফয়সলকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করেন এবং পরে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন তাঁরা। লাশটি বিদ্যালয়ের মাঠে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই বছরের ১৩ জুন ফয়সলের বড় বোন সালমা আক্তার বাদী হয়ে শামীম মিয়াসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে হোমনা থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. শামীম সরকার তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি শামীম মিয়া ও দুলাল মিয়াকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। পরে তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শামীম মিয়া ও দুলাল মিয়া আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি শেখ মাসুদ ইকবাল মজুমদার ও মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আশা করছি, উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন।’

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী বিমল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, রায়ে আসামিপক্ষ অসন্তুষ্ট ও ক্ষুব্ধ। রায়ের কপি হাতে পেলে শিগগিরই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।