কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ল বাংলাদেশি পোষা হাতি

মৌলভীবাজারে সীমান্তে ভেঙে যাওয়া কাঁটাতারের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়া বাংলাদেশি পোষা হাতি চন্দ্রতারা
 ছবি. সংগৃহীত

বৃষ্টিতে টিলা ধসে কাঁটাতারের বেড়ার কিছু স্থান ফাঁকা হয়ে গেছে। এই সুযোগে বাংলাদেশি একটি পোষা হাতি ভারতে ঢুকে পড়েছে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বন বিভাগের কুরমা রেঞ্জের কাঁঠালকান্দি সীমান্ত এলাকায় গত বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে। হাতিটির নাম চন্দ্রতারা। হাতিটি ভারতের স্থানীয় বন বিভাগের জিম্মায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

চন্দ্রতারার মালিক কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক। আজ শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, হাতিটির মাহুতের (হাতি লালনপালনকারী) বাড়ি কাঁঠালকান্দি সীমান্ত এলাকায়। সম্প্রতি তিনি হাতিটিকে সেখানে নিয়ে যান। হাতিটি বনের জমিতে বিচরণ করত। সেখানে সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিতে টিলা ধসে বেড়ার কিছু অংশ ভেঙে যায়। গত বুধবার রাতে চন্দ্রতারা ওই ফাঁকা স্থান দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে। সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাসহর এলাকা পড়েছে।

১২ সেপ্টেম্বর কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন হাতিটির মালিক। এ ছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৬ ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেছেন। এ সময় তাঁদের কাছে হাতি লালনপালনে বন বিভাগের দেওয়া অনুমতিপত্রসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। বিজিবির কর্মকর্তারা ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন মালিককে।

এম এ রহমান আতিক জানান, ভারতের কৈলাসহরে তাঁদের আত্মীয়স্বজন রয়েছেন। তাঁরাও হাতিটির বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। আত্মীয়স্বজনেরা জানিয়েছেন, প্রথমে স্থানীয় এক ব্যক্তি হাতিটির মালিকানা দাবি করেন। পরে সেখানকার বন বিভাগের লোকজন হাতিকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যান। তিনি বলেন, চন্দ্রতারার বয়স ৪১ বছর। সে নারী হাতি। চন্দ্রতারাসহ তাঁর চারটি পোষা হাতি রয়েছে।

শ্রীমঙ্গলে বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, তাঁরা ঘটনাটি জেনেছেন। হাতিটির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাঁরা বিএসএফকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া মেলেনি। উভয় দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হাতিটি ফেরত আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভারতে ঢুকে পড়া হাতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বলেন, ভারতে অনেক হাতির শরীরে চিপস লাগানো রয়েছে। ফলে ওই হাতির মালিকানা, গতিবিধি সম্পর্কে জানা যায়। বাংলাদেশেও কিছু হাতির রয়েছে, তবে সব হাতির ক্ষেত্রে এটা করা দরকার।