চুয়াডাঙ্গায় নিহত গৃহবধূর বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি
চুয়াডাঙ্গায়  নিহত গৃহবধূর বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি

চুয়াডাঙ্গায় দিনের বেলা ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় অঞ্জলি প্রামাণিক (৫০) নামের এক গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের দৌলাতদিয়াড় গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। খুনিরা এ সময় ঘরে রাখা নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।

নিহত অঞ্জলি প্রামাণিক দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা নরসুন্দর গণেশ প্রামাণিকের স্ত্রী। ঘটনার সময় অঞ্জলি একাই বাড়িতে ছিলেন এবং স্বামী গণেশ প্রামাণিক আলুকদিয়া বাজারে সেলুনে ছিলেন। অঞ্জলি প্রামাণিক খুনের ঘটনা জানাজানি হলে সদর থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বেলা ১টা ৩০ মিনিটে সরেজমিন দেখা যায়, গৃহবধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ ঘরের মধ্যে পড়ে আছে। বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি। একজন নারী কনস্টেবলের সহযোগিতায় সদর থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ বছর আগে গণেশ-অঞ্জলি দম্পতির একমাত্র সন্তান সঞ্চিতা বিশ্বাসের বিয়ে হয়। কিছুদিন পর সংসারে অশান্তির কারণে শ্বশুরবাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সঞ্চিতা। এর পর থেকে গণেশ-অঞ্জলি দম্পতি দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়ার আধা পাকা টিনশেডের বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। তবে কয়েক মাস ধরে অঞ্জলির ভাই চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের অশোক বিশ্বাসের মেয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী কুমারী ঐশি বিশ্বাস (১৭) এই বাড়িতে থাকতেন। সপ্তাহখানেক আগে ঐশি বাবার বাড়িতে যান। অসুস্থ ফুফু অঞ্জলিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজ বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে এসে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।

ঐশি বিশ্বাস প্রথম আলোকে জানান, তাঁর ফুফার কাছ থেকে ফোন পেয়ে বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে আসেন। ভেতর থেকে গেট বন্ধ থাকায় কয়েকবার ধাক্কা দেন। এরপর জানালায় ধাক্কা দেন। এতে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশী নন্দ সূত্রধরের স্ত্রী মিতালী সূত্রধরকে ডেকে আনেন। মিতালী সূত্রধর কয়েকজন কিশোরকে বললে তারা প্রাচীর টপকে ভেতরে গিয়ে গেট খুলে দেয়। এরপর ঘরের ভেতরে ঢুকে তাঁরা অঞ্জলি প্রামাণিকের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।

অঞ্জলির স্বামী গণেশ প্রামাণিক বলেন, কী কারণে ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি বলতে পারছেন না। কারও সঙ্গে শত্রুতাও নেই। বাড়িতে জমি বিক্রির বায়না করার ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং তিন ভরির বেশি স্বর্ণালংকার ছিল। খুনিরা টাকা ও কিছু গয়না নিয়ে গেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, খুনের রহস্য উন্মোচনে সদর থানা-পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্তের কাজ শুরু করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।