যশোরে যুবদল কর্মীকে হত্যার অভিযোগে মামলা, ছাত্রদল নেতা আসামি

যুবদল কর্মী পিয়াল হাসান
ছবি: সংগৃহীত

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসানকে (২৮) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে নিহত পিয়ালের বাবা কিতাব আলী বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন। তবে আজ বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলায় ঝিকরগাছা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম রেজাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আর অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ছয় থেকে সাতজনকে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জেরে গতকাল শনিবার দুপুরে ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের পাশে ৮ থেকে ১০ জন পিয়ালকে ধাওয়া দেন। পিয়াল দৌড়ে পাশের বিদ্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে সেখানে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যশোর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পিয়ালের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে তাঁর লাশ পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়। নিহত পিয়াল ঝিকরগাছা উপজেলার মোবারকপুর বিশ্বাসপাড়া এলাকার কিতাব আলীর ছেলে। তিনি ঝিকরগাছা বাজারে মুরগির ব্যবসা করতেন। তাঁর চার বছরের এক কন্যাসন্তান আছে।

ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবলুর রহমান খান বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সবাই পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঝিকরগাছা বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৫ আগস্ট পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম রেজার সঙ্গে যুবদলের কর্মী পিয়াল হাসানের বিরোধ হয়। সেই বিরোধের জেরে পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন শামীমের বাবা কামরুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করেন। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পিয়ালসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। দেড় মাস কারাভোগ করে ৮ নভেম্বর জামিনে মুক্ত হন তাঁরা। গতকাল শনিবার পিয়াল ঝিকরগাছা রেলস্টেশন এলাকায় শামীম রেজার কাছে গিয়ে ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চান। এ সময় শামীম তাঁর সহযোগীদের মুঠোফোনে ডেকে এনে পিয়ালকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে পিয়ালকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

নিহত পিয়ালের ভাই সুমন হাসান বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শামীমের বাবা আহত হওয়ার ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে পিয়াল শনিবার দুপুরে শামীমের কাছে মাফ চাইতে যান। কিন্তু শামীম মাফ না করে তাঁর লোকজন ডেকে কুপিয়ে ও বোমা মেরে তাঁকে হত্যা করেছেন। আমরা খুনিদের ফাঁসি চাই।’

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির মধ্যে দুটি পক্ষ আছে। বর্তমান উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা সুলতানা ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ একটি পক্ষে এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী অপর পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নিহত পিয়াল হাসান বিএনপি নেতা ইমরান সামাদের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।