মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় তানহা মাহমুদা নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার রাতের এ ঘটনায় আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ওই গৃহবধূর লাশ নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। এ সময় লাশটি ভ্যানগাড়িতে রাখা ছিল।
নিহত তানহা মাহমুদা মিরকাদিম পৌরসভার উত্তর কাগজীপাড়া এলাকার মো. মহিউদ্দিনের মেয়ে। তিনি পঞ্চসারের মালিরপাথর এলাকার এমদাদুল হকের ছেলে ফেরদৌস হাসান সোহানকে (৩০) দুই বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। এই দম্পতির ঘরে এক বছরের একটি মেয়েসন্তান রয়েছে। তাঁরা মিরকাদিমের এনায়েতনগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল রোববার রাতে তানহাদের ঘর থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এর কিছুক্ষণ পরই সোহান বলতে থাকেন, তাঁর স্ত্রী তানহা গলায় ফাঁস দিয়েছেন। পরে তাঁকে দ্রুত সেখান থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, গত রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই তরুণীকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আসার আগেই তিনি মারা যান। তাঁর একজন স্বজন বলছিলেন, গলায় ফাঁস দিয়ে ওই তরুণী মারা গেছেন বলা হলেও তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
নিহত তানহার বাবা মো. মহিউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়ের জামাই ফেরদৌস হাসান মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। সে জুয়ায়ও আসক্ত ছিল। এ নিয়ে প্রায় সময় কথা-কাটাকাটি হলে তানহাকে মারধর করত। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার বিচার-সালিসও করা হয়। গতকাল ঝগড়া করে মেয়েটাকে শ্বাসরোধে মেরেই ফেলল।’ নিহত নারীর ভাই নূর আলম বলেন, ‘আমার বোনকে হত্যা করেছে ফেরদৌস। হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে ফাঁসির নাটক বানিয়েছে। আমি বোন হত্যার বিচার চাই।’
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তারিকুজ্জামান সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর শরীরে পুরোনো খামচি ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। তবে মামলার বিষয়ে এখন বলা যাবে না। অভিযুক্ত ফেরদৌস হাসানাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।