বন্যায় প্লাবিত এলাকা। পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামের লোকজন। মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের বাসন্তি গ্রামে
বন্যায় প্লাবিত এলাকা। পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামের লোকজন। মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের বাসন্তি গ্রামে

কুড়িগ্রামে দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ৭ দিন ধরে বিপৎসীমার ওপরে

ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। সাত দিন ধরে দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে লোকজন।

আজ বুধবার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৩৪ সেন্টিমিটার ও হাতিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাত দিন ধরে দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে আছে। তবে আজ ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বজরা দিয়ারখাতা এলাকার বাসিন্দা নুর হাসিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পনেরো দিন থেকে চরত পানি, কামকাজ সউগ বন্ধ হয়া আছে। বাসাত যা জমানো টাকা আছিল (ছিল) সউগ শ্যাষ। এল্যা ছাওয়া-পোয়া (ছেলে–মেয়ে) নিয়ে চারজন মানুষ খুব বিপদে আছি। দুই দিন আগত মেম্বারে ১০ কেজি করি চাল দিয়ে গেইছে। বাজার করার টাকা নাই, বাড়িত তরিতরকারি কিছুই নাই। ছোট ছাওয়াটার জ্বর দুই দিন থাকি। বিপদ আসি হামাক একবারে ঘিরি ধরছে।’

বেশ কিছুদিন ধরে কুড়িগ্রামে বন্যায় নদ-নদীতীরবর্তী অঞ্চলের মানুষের জমানো খাবার শেষ হয়ে গেছে। গোচারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় পশুর খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসি মানুষের চর্মরোগ ও বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।

নয়ারহাট ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর ওয়ার্ডের বজরা দিয়ারখাতা, ফেইস্কা, হাতিয়া বকশি, বাতাসি কাজলডাঙ্গা এলাকার প্রায় ৪০০ পরিবার বন্যাকবলিত। কিন্তু সেই তুলনায় ত্রাণ বরাদ্দ আসেনি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫০টি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল, সংসদ সদস্যের তহবিল থেকে ১২০ পরিবারকে শুকনা খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। বাতাসি কাজলডাঙ্গায় ১০০ পরিবারের সদস্য বসতবাড়ি নদীতে ভেঙে বিপাকে আছেন। তাঁরা কেউ ত্রাণ পাননি।