আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকায় অন্যতম শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী নবী হোসেনকে(৪৭) গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। এর আগে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল বিজিবি। গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবি থেকে বিদেশি পিস্তলসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নবী হোসেনের ছোট ভাই সৈয়দ হোসেন ওরফে ভুলুকেও (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার নবী হোসেন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সংগঠন ‘নবী হোসেন বাহিনীর’ প্রধান।
গতকাল শনিবার রাতে নবী হোসেনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল। তিনি বলেন, ইয়াবা চোরাচালানের অন্যতম হোতা নবী হোসেন তাঁর বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বালুখালী আশ্রয়শিবিরের একটি আস্তানায় অবস্থান করছিলেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এপিবিএন সদস্যরা শুক্রবার গভীর রাতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সন্ত্রাসী নবী হোসেন ও তাঁর ভাই সৈয়দ হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন তাঁরা। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও আটটি গুলি উদ্ধার করা হয়। রাতে দুজনকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করে মামলা করা হয়।
পুলিশ ও র্যাব সূত্র জানায়, নবী হোসেন মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান বাংলাদেশে নিয়ে এসে আশ্রয়শিবিরে মজুত করেন। সেখান থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। উখিয়ার বালুখালীতে তিনি অবস্থান করতেন। আশ্রয়শিবিরে নবী হোসেন বাহিনীর শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইয়াবা চোরাচালান পরিচালিত হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নবী হোসেনকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি। নবী হোসেনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা, অস্ত্র, অপহরণসহ অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে। আশ্রয়শিবিরে যখন অভিযান পরিচালনা করা হতো, তখন নবী হোসেন তাঁর দলবল নিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্তে অবস্থান নিতেন।
টানা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বিপুল এলাকা দখলে নিয়ে নেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সম্প্রতি নবী হোসেন তাঁর সহযোগীদের নিয়ে নাফ নদী অতিক্রম করে উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে আত্মগোপন করেন। নবী হোসেনের গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।