ভয়াবহ বন্যায় পাঁচ বছর আগে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়া গ্রামে খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে যায়। এতে উপজেলা শহরের সঙ্গে সেতুর পশ্চিম পাশের পাঁচটি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শুকনা মৌসুমে পায়ে হেঁটে এবং বর্ষায় নৌকায় চলাচল করে ওই এলাকার মানুষ। যানবাহন চলাচল না করায় ভোগান্তিতে রয়েছে সেখানকার বাসিন্দারা।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাঙ্গালপাড়ায় বিশাল একটি খাল। শুকনা মৌসুম হওয়ায় খালের মধ্যে পানি অনেকটাই কম। খালের মধ্যে সেতুর কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ভেঙে যাওয়া সেতুর কয়েকটি কংক্রিটের টুকরা রয়েছে। সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে লোকজন পায়ে হেঁটে যাতায়াত করছেন। তবে এই পথে এখন আর কোনো যানবাহন চলাচল করে না। কয়েকজন জানান, যানবাহন নিয়ে উপজেলা শহরে যেতে হলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয়। এতে তাঁদের অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়।
গাজীরপাড়া গ্রামের পল্লিচিকিৎসক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি পার হয়ে মাত্র ১০ মিনিটে উপজেলা শহরে যাওয়া যেত। সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পথ ঘুরে উপজেলা শহরে যেতে হয়। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় লোকজন।’
সেতুটি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, উপজেলার বাঙ্গালপাড়া খালের ওপর ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু ছিল। সেতুটির পশ্চিম পাশের বাঙ্গালপাড়া, গাজীরপাড়া, চর গাজীরপাড়া, কতুবেরচর ও দপরপাড়া গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল সেতুটি। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে উপজেলায় ভয়াবহ বন্যায় হয়। বন্যায় পুরো সেতু পানির তোড়ে ভেঙে ভেসে যায়। এতে ওই পাঁচ গ্রামের সঙ্গে উপজেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়ে এসব গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো.জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্যে স্থানীয় প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু এর কোনো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। মানবিক কারণে হলেও সেখানে একটি সেতু নির্মাণের দরকার।
বিষয়টি নজরে আনা হলে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো.শামছুল হক বলেন, ওই খালের ওপর নতুন একটি সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই স্থানটি পরিদর্শন করেছে। আশা করা যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।