সুনামগঞ্জে গতকাল শনিবার রাতে ও আজ রোববার ভারী বৃষ্টি হয়নি। এতে জেলার নদ–নদী ও হাওরে আবার পানি কমতে শুরু করেছে। নদীতে দ্রুত পানি কমলেও হাওরে কমছে ধীরে। হাওর এলাকার অনেক বাড়িঘর, রাস্তাঘাট এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে আছেন লোকজন। পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায়ও এখনো পানি নামেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটায় পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। গত শুক্রবার একই সময়ে পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয় ১২ মিলিমিটার।
সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি কমতে শুরু করে ১ জুলাই থেকে। ৪ জুলাই সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নামে। তবে নদী ও হাওরে পানি কমে ধীরে। অনেক স্থানে রাস্তাঘাট ও মানুষের বাড়িঘরে পানি ছিল। মঙ্গলবার সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। এরপর মঙ্গলবার রাত থেকে আবার সুনামগঞ্জে ও উজানে ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি হয়। এতে পাহাড়ি ঢল নেমে নদীর পানি বেড়ে যায়।
সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আকরাম উদ্দিন বলেন, আজ দিনভর যেভাবে রোদ ছিল, এভাবে তিন থেকে চার দিন থাকলে পানি নেমে যাবে। বৃষ্টি হলেই সমস্যা। পাহাড়ি ঢল নামে, আবার পানি বাড়ে।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার সেলিনা বেগম (৫৫) জানান, মেয়ে ও দুই নাতি-নাতনি নিয়ে একটি আধা পাকা টিনশেড ঘরে বসবাস করেন তিনি। ঈদের দিন সকালে (১৭ জুন) ঘরে বন্যার পানি ঢুকেছিল। এখনো নামেনি। পুরো পরিবার নিয়ে বড় ভোগান্তিতে আছেন।
সেলিনা বেগমের মেয়ে তমা বেগম (২৫) বলেন, ‘নদীর পানি সকালে কমছে। কিন্তু হাওরের পানি না কমলে আমরা ঘর থাকি নামত না। আমরা বড় কষ্টে আছি।’ তাহিরপুরের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল নামলেই বিপদ। তখন পানি বাড়ে। ঢল না নামলে পানি কমে।’
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা হালকা ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এ সময় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে না। মূলত ভারী বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢল নামলেই পানি বাড়ে। এখন ভারী বৃষ্টি ও ঢল কম। তাই পানি কমতে শুরু করেছে।