সাত দিনেও কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হত্যায় জড়িতরা শনাক্ত হয়নি, এসপির কার্যালয় ঘেরাও

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এসপি কার্যালয় ঘেরাও। আজ বৃহস্পতিবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের লাশ উদ্ধারের সাত দিন পেরিয়ে গেছে। এই সাত দিনের মধ্যে হত্যার কারণ বা এতে কারা জড়িত, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো কোনো কিছু জানাতে পারেনি। হাসিবুর হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকেরা কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করেন। এর আগে গতকাল বুধবারও একই দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেছিলেন সাংবাদিকেরা।

এ ছাড়া গতকাল কুষ্টিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকেরা কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় মাহবুব উল আলম হানিফ তাঁদের বলেন, রুবেল হত্যা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা এডিটরস ফোরামের সভাপতি মজিবুল শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঘেরাও কর্মসূচিতে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন, কুষ্টিয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতা-কর্মীসহ অর্ধশতাধিক সাংবাদিক কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে পুলিশ সুপারের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেন। কুষ্টিয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসান আলীর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া এডিটরস ফোরামের সভাপতি মজিবুল শেখ, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সহসভাপতি নুরুন্নবী, গোলাম মওলা, কোষাধ্যক্ষ লিটন উজ জামান, নির্বাহী সদস্য আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।

৭ জুলাই দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদ থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

একপর্যায়ে সাংবাদিকদের সমাবেশস্থলে ফটকের সামনে উপস্থিত হন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন সাংবাদিকেরা। এসপির মাধ্যমে পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর এই স্মারকলিপি পাঠানোর কথা জানান তাঁরা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিক হাসিবুর নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। তাঁর লাশ পাওয়ার পর থানায় হত্যা মামলা হয়। কিন্তু আজও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এতে সাংবাদিকেরা ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি জানানো হয়।

কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, সাংবাদিক হাসিবুর নিখোঁজের পর থেকেই পুলিশ ব্যাপকভাবে কাজ করছে। শিগগিরই এ ঘটনার সবকিছু উন্মোচন করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর লিখিত আবেদনটি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

৩ জুলাই রাত নয়টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে পত্রিকা অফিসে ছিলেন হাসিবুর। তখন মুঠোফোনে একটি কল পেয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় জিডি করে তাঁর পরিবার। এর চার দিন পর ৭ জুলাই দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদ থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৮ জুলাই রাতে হাসিবুর রহমানের চাচা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।