দুই স্বতন্ত্রের শক্ত চাপে আ.লীগের প্রার্থী

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী) আসনের নির্বাচনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর শক্ত চাপের মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। নৌকার প্রার্থীকে জিততে হলে বেশ বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন দলের একাংশের নেতা-কর্মী।

এ আসনে নৌকার প্রার্থী ২০২০ সালের উপনির্বাচনে জয়ী সংসদ সদস্য ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম। দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন সদ্য পদত্যাগ করা সাদুল্যাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাহারিয়া খান এবং জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মফিজুল হক সরকার।

দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, সংসদ সদস্য হওয়ার পর উম্মে কুলসুম তাঁর আত্মীয়স্বজনসহ বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের প্রাধান্য দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করেননি। এ কারণে তাঁরা উম্মে কুলসুমের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন। তাঁকে ভোটে জিততে বেগ পেতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এ উপজেলার বেশির ভাগ নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাঁরা গোপনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুল হককে বিজয়ী করতে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। তিনি পরিচ্ছন্ন মানুষ। তাই দলের কর্মীরা তাঁকে বেছে নিয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুল হক বলেন, ‘এলাকার মানুষ এখন উন্নয়ন চান। সংসদ সদস্যকে সব সময় পাশে চান। কিন্তু এখানকার সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম নির্বাচিত হওয়ার পর তেমন একটা এলাকায় আসেননি। মানুষের কল্যাণ করেননি। আশা করি জনবিচ্ছিন্ন কাউকে এলাকার মানুষ ভোট দেবেন না। দুই উপজেলার বেশির ভাগ নেতা-কর্মী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমার পক্ষে কাজ করছেন।’

দলীয় নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, সংসদ সদস্য হওয়ার পর দুই উপজেলার দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ায় তিনি বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকতেন। এ কারণে দলের নেতা-কর্মীরা সহজে তাঁকে কাছে পাননি। এতেও অনেক নেতা-কর্মী তাঁকে বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী সাহারিয়া খান দাবি করেন, ‘সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম উপজেলার বিভিন্ন কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে কৃষক লীগে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁদের নিয়ে তিনি চলাফেরা করেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন। দলের প্রধানও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত রেখেছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয়ের বিষয়ে আমি আশাবাদী।’

উম্মে কুলসুমের পক্ষের নেতা-কর্মীরা বলেন, উম্মে কুলসুম উপনির্বাচনে জয়ী হন। তিনি মাত্র তিন বছর সময়ের মধ্যে দুই উপজেলার রাস্তাঘাট, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। তবু যাঁরা নেত্রীর বিরুদ্ধে বলেন, তাঁরা সত্য গোপন করছেন। তবে দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী তাঁদের সঙ্গে আছেন। সবাই এককাট্টা হয়ে নৌকাকে জেতাতে কাজ করছেন।

নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আওয়ামী লীগ প্রার্থী উম্মে কুলসুম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই উপজেলায় দলের সব নেতা-কর্মী নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। এখানে দলে কোনো বিভেদ নেই। জয়ের ব্যাপারে আমি এক শ ভাগ আশাবাদী। এবার হলে রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করব।’