মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনায় পড়ে
মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনায় পড়ে

‘দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস থেকে শুধু বাঁচার আকুতি আসছিল’

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দুর্ঘটনা নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা কথা বলেছেন। তাঁদের অনেকে উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। তাঁদের বয়ানে উঠে এসেছে দুর্ঘটনাকালের চিত্র।

বিল্লাল হোসেনের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকায়। তিনি বলেন, সকাল সাড়ে সাতটার কথা। বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ কানে ভেসে আসে। বিকট শব্দ শুনে বাসা থেকে দৌড়ে বের হয়ে দেখেন, বাস খাদে পড়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে আশপাশে কেউ নেই। চিৎকার করে মানুষ ডেকে ডেকে তিনি উদ্ধারকাজে লেগে যান। তিনি অন্তত ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন বলে দাবি করলেন। ‘এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা আগে কখনো দেখেননি’ উল্লেখ করে বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গিয়ে দেখি, ইমাদ পরিবহনের বাসটি সার্ভিস লেনের ব্রিজের সঙ্গে মিশে আছে। বাসটির সামনের অংশ পুরোটাই দুমড়েমুচড়ে গেছে। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাসের ভেতর থেকে শুধু বাঁচার আকুতি আসছিল।’

বিল্লালের সঙ্গে উদ্ধারকাজে অংশ নেন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘বাসটির ভেতরে ঢুকে ১৪ জনকে মৃত অবস্থায় দেখি। এর মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। আমিসহ স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। চারপাশে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি।’

খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসের চালক পদ্মা সেতুর আগে কুতুবপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এই দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন।

পুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের এক্সপ্রেস রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপক মাহফুজুল ইসলাম বলেন, গাড়িটির সামনের দিকের একটি চাকা ফেটে যায়। চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাসটি হাইওয়ের একটি মাইলফলকে গিয়ে আঘাত করে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিচের খাদে পড়ে যায়। অতি গতিসম্পন্ন বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ছিটকে নিচের আন্ডারপাসে গিয়ে পড়ার সময় পাঁচটি গাছ ভেঙে যায়।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সেলিম সরদার বলেন, ‘শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাসে আরোহীরা আটকা পড়েছেন।’

দুর্ঘটনাস্থলে কথা হয় ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৈমুর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। অনেক কোম্পানি তাদের পরিবহনের বাসগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু বেশির ভাগ‌ কোম্পানি এই পদ্ধতি অনুসরণ করে না।