নান্দাইল বিটিসিএল কার্যালয়ের আঙিনায় চলছে ইট, বালু ও খোয়ার ব্যবসা 

বিটিসিএল কার্যালয়টি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। কার্যালয়ের আঙিনাজুড়ে ইট, বালু ও খোয়া স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় বিটিসিএল কার্যালয়ের সামনে চলছে ইট, বালু ও খোয়ার ব্যবসা। গত শনিবার চারিআনিপাড়া মহল্লায়

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা বিটিসিএলের (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড) কার্যালয়ের আঙিনাজুড়ে ইট, বালু ও খোয়া রাখা হয়েছে। সেখানে দু-তিন দিন পরপর ইটের খোয়া ভাঙার একটি মেশিন আনা হয়। খোয়া ভেঙে শ্রমিকেরা এক পাশে স্তূপ করে রাখছেন। বিটিসিএলের কার্যালয়ের ওই প্রাঙ্গণ থেকে অনেকে এসব নির্মাণসামগ্রী কিনে নিয়ে যান।

গতকাল রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে দেখা যায়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে নান্দাইল পৌরসভার চারিআনিপাড়া মহল্লায় বিটিসিএল কার্যালয়টি অবস্থিত। এই কার্যালয়ের বিপরীত দিকে রয়েছে সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরের একাধিক গুদাম। আশপাশের লোকজন বলেন, তাঁরা এই কার্যালয়টি বেশ কয়েক বছর ধরে খুলতে দেখেননি। কোনো কর্মকর্তাকেও এখানে আসতে দেখা যায় না। বিটিসিএল কার্যালয়টি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। কার্যালয়ের আঙিনাজুড়ে ইট, বালু ও খোয়া স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, একাধিক ব্যবসায়ী বিটিসিএল কার্যালয়ের আঙিনাজুড়ে এসব উপকরণ রেখে বেচাকেনা করেন। তবে রোববার সকালে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নিয়মিত বিটিসিএলের প্রাঙ্গণে এসে ইট ভেঙে খোয়া তৈরি করেন কিশোরগঞ্জের মো. আবুল কালাম (৪৮)। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা তাঁকে খবর দেন। পরে তিনি মেশিন ও শ্রমিক নিয়ে এসে ইট ভেঙে খোয়া তৈরি করে দেন। বিটিসিএলের দোতলা ভবনটি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে আবুল কালাম বলেন, এটি সরকারি কোনো অফিস হতে পারে। তবে কিসের অফিস, তা বলতে পারেননি তিনি।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০১ সালে বিটিসিএল কার্যালয়ে একটি ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ স্থাপন করা হয়েছিল। এই এক্সচেঞ্জের আওতায় একসময় নান্দাইল পুরোনো বাজার ও নতুন বাজারে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে শতাধিক টেলিফোন সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে এখন কয়টি সংযোগ চালু আছে, এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মো. তরিকুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক বলেন, একসময় টেলিফোন সংযোগ পেতে ওই কার্যালয়ে অনেককে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন। এখন টেলিফোনের আর সেই দিন নেই। তাঁদের বাড়ির সংযোগটিও নেই। তবে এ জন্য কোনো সমস্যায় পড়েন না। কারণ, মুঠোফোনেই সব কাজ করা যায়।

নান্দাইলে বিটিসিএলের ইন্টারনেট পরিষেবা চালু আছে কি না, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিটিসিএল থেকে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়েছেন কি না, শহরের পুরোনো ও নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন কোনো গ্রাহক পাওয়া যায়নি। তবে এ উপজেলায় একাধিক বেসরকারি কোম্পানির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা চালু রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতেও এসব কোম্পানির  ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা চালু রয়েছে।

নান্দাইল বিটিসিএল কার্যালয়ের আঙিনায় নির্মাণ উপকরণ রেখে বেচাকেনা করার বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ টেলিকমের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. হানিফ উদ্দিন বলেন, তিনি এ বিষয়টি জানেন না। এমনটা হলে নান্দাইল উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নান্দাইলে কতগুলো টেলিফোন সংযোগ চালু রয়েছে, সে হিসাব তাঁর কাছে নেই। তবে সরকারি কিছু অফিসের সংযোগ চালু আছে।