বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনা শহরে দুদিন ছিল অচলাবস্থা। আজ সকাল থেকে কর্মচাঞ্চল্য দেখা যায়। ছবিটি জেলখানা ঘাট এলাকায় তোলা
বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনা শহরে দুদিন ছিল অচলাবস্থা। আজ সকাল থেকে কর্মচাঞ্চল্য দেখা যায়। ছবিটি জেলখানা ঘাট এলাকায় তোলা

দুই দিনের ‘ধর্মঘট’ শেষে খুলনায় স্বাভাবিক হয়েছে বাস ও লঞ্চ চলাচল

দুই দিন ‘ধর্মঘট’ করার পর খুলনায় বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে এসব গণপরিবহন খুলনা থেকে ছাড়া শুরু হয়েছে। অন্যদিকে খুলনায় প্রবেশের প্রধান দুই খেয়াঘাট চালু হয় গতকাল শনিবার রাত ৯টার পর থেকে।
এ তিন পরিবহন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাঁরা যেসব ‘দাবিতে’ কর্মবিরতি ও ধর্মঘট পালন করেছেন, প্রশাসন তা ‘মেনে নেওয়ার’ আশ্বাস দিয়েছে। এ কারণে তাঁরা পরিবহনগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

খুলনায় গত শুক্রবার ও গতকাল ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করেছে খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ লঞ্চ শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা শাখা। আর ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছিল মাঝি সমিতি। তাদের ওই কর্মবিরতি শুরু হয়েছিল শুক্রবার রাত ৯টা থেকে।

গতকাল ছিল বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ। খুলনা নগরের ডাকবাংলো এলাকার সোনালী ব্যাংক চত্বরে ওই সমাবেশের আয়োজন করেছিল খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি। বিএনপির অভিযোগ, সমাবেশে লোক সমাগম ঠেকাতে ষড়যন্ত্র করে এসব গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও মানুষ শত দুর্ভোগ উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে খুলনায় এসে পৌঁছেছে। বিএনপির সমাবেশে শেষ হওয়ার পরই সবকিছুর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘বেশ কিছু দাবিতে মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধ করেছিল। তাদের সঙ্গে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করেছিলাম। রাতে মালিক সমিতি বাস চালু করতে বলেছে, আমরা বাস চালু করেছি। মালিক সমিতি আমাদের জানিয়েছে, তাদের দাবি পূরণের জন্য প্রশাসনের আশ্বাস পাওয়া গেছে।’

গত বুধবার এক বৈঠকে ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। ওই দিন দুপুরে দেওয়া তাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নছিমন, করিমন, মাহিন্দ্র ও ইজিবাইক চলাচল করছে। ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন এগুলো বন্ধ না করলে ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

অন্যদিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা জেলা শাখা। সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে ২১ ও ২২ অক্টোবর ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তবে শুক্রবার রাতে মালিক-শ্রমিক পক্ষের বৈঠকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে যাত্রী পারাপার শুরু করেছেন রূপসা ঘাটের মাঝিরা। যাত্রীপ্রতি ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ২২ অক্টোবর ধর্মঘট ডেকেছিলেন তাঁরা।

রূপসা ঘাট মাঝি সংঘের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ ব্যাপারী বলেন, ‘সন্ধ্যায় প্রশাসনের সঙ্গে মাঝিদের বৈঠক হয়। বৈঠকে আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হলে রাত ৯টার পর থেকে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে।’