ছিলেন শিক্ষক। এরপর শুরু করেন ব্যবসা। ব্যবসা করতে করতে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান হন। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করার সুবাদে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। এরপর হয়ে যান সংসদ সদস্য (এমপি)। সবশেষে প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন।
ইউপি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এমপি হওয়ার পর দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে যায়। চাঁদাবাজি, জমি দখল, ঘের দখল ও সরকারি নানা প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তিনি পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক এমপি, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. মহিববুর রহমান। এত দিন মহিববুর রহমানের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাননি।
কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এস এম রাকিবুল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, মহিববুর এমপি থাকাকালে এমন কোনো খাত নেই যে দুর্নীতি করেননি। টাকা ছাড়া তিনি কোনো কাজই করেননি। মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে জমি কিনেছেন। এসব কর্মকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দলের। তিনি দলের অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মহিববুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য পটুয়াখালী জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সম্পাদিত জমির দলিল এবং রেকর্ডের বিস্তারিত তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মহিববুরের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি এবং হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে পাঁচটি মামলা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক। এ কারণে অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের অভিযোগের বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
দুস্থ, অসহায়, প্রতিবন্ধী, বন্যাদুর্গত, নদীভাঙনকবলিত লোকজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া টাকা মহিববুর রহমান তাঁর পছন্দের লোক ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দিয়েছেন। ২৯ আগস্ট কয়েকজন ব্যক্তি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা অধিশাখার গত ৯ জুন অনুমোদন করা উপকারভোগীদের একটি তালিকা ফেসবুকে প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, ১২৩ জনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এমপি হিসেবে স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০১৯ সালের ২২ আগস্টের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, নিঃস্ব ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য মূলত স্বেচ্ছাধীন তহবিল; কিন্তু সাবেক প্রতিমন্ত্রী সচ্ছল ব্যক্তিদের ওই তহবিল থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন।
সুবিধাভোগীদের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ঢাকার শেওড়াপাড়ার মো. শফিউল আলম ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন। মহিপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম পেয়েছেন ১০ হাজার টাকা। কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ বি এম শামসুজ্জামান, লালুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তারিক খান, ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনির খলিফা, সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার, ধুলাসার ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা শাহরিয়ার সবুজ, কলাপাড়া পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল ব্যবসায়ী মো. মাহবুব আকন, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের নেতা রাইসুল ইসলাম পাঁচ হাজার টাকা করে পেয়েছেন।
রাঙ্গাবালী উপজেলার স্বেচ্ছাধীন তহবিলের টাকা পেয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেক লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রওশন আহম্মেদ মৃধার স্ত্রী আঁখিমনি, উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, স্বেচ্ছাধীন তহবিলের সুবিধাভোগীদের তালিকা সাবেক প্রতিমন্ত্রী নিজেই করেছেন। গত ২ জুলাই তাঁর উপস্থিতিতে অনুদানের টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় কলাপাড়া উপজেলায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২৫টি দুর্যোগসহনীয় ঘর; কিন্তু এসব ঘর পেয়েছেন মহিববুরের ভাতিজা, ভাগনে, নাতি, প্রতিবেশী ও দলীয় লোকজন। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ২৫টি ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, সাবেক এমপি নিজে পছন্দমতো তালিকা করে দিয়েছেন। ঘরগুলো সেই তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হয়েছে।
উপকারভোগীদের তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, ঘর পেয়েছেন ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইউনুস দালালের ভাই মো. আনিচ দালাল, সাবেক এমপির ভাতিজা নুহু মৃধা ও মো. শহিদুল ইসলাম, ভাগনে হান্নান হাওলাদার, ফুফাতো বোনের ছেলে মো. শাহদাৎ, প্রতিবেশী মো. হান্নান গাজী, চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মো. বশির উদ্দিন ও মো. সাইদুর রহমান, চাচাতো বোনের ছেলে মো. নবুয়াত।
২০২০ সালে ঘর বরাদ্দের বিষয়ে মুঠোফোনে মহিববুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আত্মীয়স্বজন ঘর পেয়েছে এটা ঠিক নয়। তবে উপকারভোগীদের অনেকেই প্রতিবেশী এ কথা সত্য।
৯ জুলাই আমতলী উপজেলার হলদিয়া বাজার এলাকায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনের তৎকালীন এমপি মো. গোলাম সরোয়ার মহিববুর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, ‘মহিববুর রহমান আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির লোকজনকে তাঁর মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন। ১১টি প্রকল্পের বিপরীতে ওই টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যে প্রকল্পে ২ লাখ লাগে না, সেখানে ২০ লাখ দিয়েছেন। আবার যে প্রকল্পে ৩ লাখ লাগে না, সেখানে ৩০ লাখ দিয়েছেন। এতে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তাঁকে ফোন করে বললাম, এ প্রকল্প পরিবর্তন করেন। তখন সে বলে, “টুকু মাথা গরম কোরো না, যা হওয়ার হয়ে গেছে, ভবিষ্যতে তোমারটা দেখব। ” আমি বললাম, এভাবে হবে না। যখন কোনো প্রতিকার পেলাম না, তখন আমি সংসদ সদস্য হিসেবে চিঠি দিয়েছি। আমি বলেছি, কতগুলো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। আপনি তা পরিবর্তন করেন; কিন্তু তিনি পরিবর্তন করেননি।’
মহিববুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। পরে জায়গা পান যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। ছিলেন কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নে তাঁর বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত আলহাজ জালাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। ২০০৩ সালে ধুলাসার ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন। তবে বেশি থাকতেন ঢাকায়। মিরপুরের কাজীপাড়ায় আসবাবের ব্যবসা করতেন। পরিষদে বরাদ্দ প্রকল্পের ভাগবাঁটোয়ারার এক পর্যায়ে ১২ জন ইউপি সদস্যের সঙ্গে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। ইউপি সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে সভা করে অনাস্থা দেওয়ারও উদ্যোগ নেন। ততবারই তিনি ঢাকা থেকে এসে ‘ম্যানেজ’ করেন। সে সময়ের কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, মহিববুর এলাকায় থাকতেন না, অথচ পরিষদে বরাদ্দের অংশ ঠিকই নিতেন।
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মহিববুর রহমান প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
কলাপাড়া পৌরসভার এতিমখানা এলাকায় মহিববুর রহমানের পৈতৃক নিবাস। পুরোনো ভবন ভেঙে ২০১৯ সাল থেকে সেখানে তাঁরা পাঁচ ভাই, এক বোন ও মা যৌথভাবে সাততলা ভবন নির্মাণ করছেন। নির্মাণাধীন ভবনটির দোতলার কাজ পুরোপুরি শেষ করে সেখানে মহিববুর রহমান বসবাস শুরু করেন। ভবনটি করতে চিংগড়িয়া খালের ১০–১৫ ফুট দখল করে ভরাট করেছেন। এতে খালের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গত ৯ ও ১০ অক্টোবর সরেজমিনে ওই বাসা তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাসার নিচে স্তূপ করে রাখা ছিল অনেক ঢেউটিন। স্থানীয় কয়েকজন জানান, এসব ঢেউটিন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের।
কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা বন্দরের কাছে ইটবাড়িয়া গ্রামের আন্ধারমানিক নদের পাড়ে ২৮ একর ৪১ শতক জমি কেনেন যুগ্ম সচিব মো. এনামুল হক এবং তাঁর পরিবারের লোকজন। প্রথমবার এমপি হওয়ার পর মহিববুর ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে সেই জমির ৮ একর স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের নামে কেনেন। ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর খেপুপাড়া সাবরেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে এ জমির দলিল হয়।
মো. এনামুল হকের চাচাতো ভাই ও জমির একজন অংশীদার মো. আবু সাঈদ হাওলাদার বলেন, ‘জমির রেকর্ডসহ যাবতীয় কাগজ আমাদের পক্ষে আছে। আমাদের নামে জমির রেকর্ড সংশোধনও করা আছে। নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করছি। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে ভূমি কার্যালয়ের কিছু মানুষের সহায়তায় আমাদের জমিতে তাঁর স্ত্রীর নামে মালিকানা সৃষ্টি করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি যাঁদের মালিক বানিয়ে তাঁর স্ত্রীর নামে দলিল করে নিয়েছেন, সেসব লোকের নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করাসহ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।’
২০১৮ সালে এমপি হওয়ার পর মহিববুর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় জমি দখলে নামেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র এলাকার লতাচাপলী মৌজায় ৩৯ শতক সরকারি জমি দখলে নিয়ে সীমানাপ্রাচীর দেন মহিববুর। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মামুনুর রশিদ স্বাক্ষরিত নোটিশে তাঁকে সরকারি ভূমির দখল ছেড়ে দিতে বলা হয়। কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ বলেন, ওই জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। জমি উদ্ধারে বড় অভিযান চালানো হবে।
স্থানীয় ভূমি কার্যালয়, প্রশাসনের তথ্য থেকে জানা যায়, মহিববুর রহমান গত ছয় বছরে প্রভাব খাঁটিয়ে বিভিন্ন স্থানে জমি কিনেছেন ২৯ একর ৭৪ শতক। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে ২২ একর ১৮ শতক। আর স্ত্রী ও নিজের নামে কিনেছেন ৭ একর ৫৬ শতক।
কুয়াকাটার পাশে জেগে ওঠা চর বিজয়, রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার, সোনার চর, মায়ার চর, জাহাজমারার চর, চর মোন্তাজ, চর তুফানিয়া, হাইরের চরসহ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত এবং গঙ্গামতি সৈকতের মোহনাসহ বিভিন্ন অংশে জেলেদের মাছ ধরার জন্য প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের লোকজনকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়েছে। জেলেদের অভিযোগ, মহিববুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মো. তরিকুল ইসলাম, ধুলাসার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিন্টু ভূঁইয়াসহ মহিববুরের ঘনিষ্ঠজনেরা জেলেদের কাছ থেকে বার্ষিক হিসাবে চাঁদা তুলতেন। কুয়াকাটার কাউয়ার চরের জেলে আবদুল মালেক বলেন, ‘চান্দা না দেলে মাছ ধরতে পারতাম না। বছর হিসাব কইর্যা এমপির লোকেরা চান্দা নিছে। আমারও দুই লাখ টাহা চাঁদা দেওন লাগছে।’
অভিযোগের বিষয়ে মিন্টু ভূঁইয়া ও মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, মোটেও সত্য নয়। হয় তো কেউ কেউ জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতে পারেন, সেটা তাঁর মতো করে। এসব সাবেক এমপি মহিববুর রহমান জানতেনও না। মহিববুর রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে এসব বলা হচ্ছে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় মহিববুর রহমানের বার্ষিক আয় ছিল ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ১৩২ টাকা। ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আয় ছয় গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৩ হাজার ৯১ টাকা। ২০১৮ সালে নগদ অর্থ দেখান ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৬ টাকা। ২০২৪ সালে ছিল ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৩ টাকা। ২০১৮ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাসিক এবং সঞ্চয়ী আমানত ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬৮ টাকা থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে দাঁড়ায় ২৪ লাখ ৪০ হাজার ৩০৮ টাকা।