ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্ষা হিজড়া বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্ষা হিজড়া বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন

ঝিনাইদহে ৫৪ হাজার ভোট পেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হলেন বর্ষা হিজড়া

ঝিনাইদহে আরও একজন হিজড়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্ষা হিজড়া বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় তিনজন হিজড়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন।

এর আগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদে নজরুল ইসলাম ঋতু চেয়ারম্যান ও কোটচাঁদপুর উপজেলায় পিংকী খাতুন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাঁরা এখনো দায়িত্ব পালন করছেন।

এবারের ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের একজন ছিলেন বর্ষা হিজড়া। নির্বাচনে তিনি প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে ৫৪ হাজার ২৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারতী দত্ত হাঁস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৩৫২ ভোট। এ ছাড়া অন্য দুই প্রার্থী পাপিয়া সমাদ্দার কলস প্রতীকে ১৪ হাজার ৭৩৪ ভোট ও মাহফুজা তাহের ফুটবল প্রতীকে ১০ হাজার ৯১৩ ভোট পেয়েছেন। হিসাব অনুযায়ী, বর্ষা হিজড়া প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ৩০ হাজার ৯০৬ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোটে জয় লাভের পর বর্ষা জানিয়েছেন, সমাজ থেকে বৈষম্য দূর করে গরিব-মেহনতি মানুষের পাশে থেকে এলাকার উন্নয়নে কাজ করাই তাঁর লক্ষ্য। তিনি বলেন, মানুষের সেবা করার যে মনোভাব নিয়ে তিনি এগিয়ে চলেছেন এই বিজয় তারই ফল।

ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া এলাকার আলিজান মীর ও আছিয়া বেগমের ৫ সন্তানের মধ্যে বর্ষা সবার ছোট। হলফনামা অনুযায়ী, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন তিনি।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নবনির্বাচিত বর্ষা হিজড়া বলেন, হিজড়া পরিচয় নিয়ে বাঁচা অত্যন্ত কঠিন। সমাজে তাঁকে অনেক অপমান সইতে হয়েছে। সবার চেয়ে ভিন্ন হওয়ায় পেরিয়েছেন নানা প্রতিকূলতা। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। সব সময় নিজেকে সমাজসেবায় জড়িয়ে রেখেছেন। অসহায় গরিব মানুষের পাশে থেকে জয় করেছেন তাঁদের মন। এবার তিনি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে আরও দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, তাঁর এই বিজয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের অন্যরা খুবই খুশি। অনেকে তাঁর বাড়িতে ছুটে এসেছেন, মিষ্টিমুখ করিয়ে গেছেন। মুঠোফোনে অভিনন্দন জানাচ্ছেন দূরদূরান্ত থেকে।