রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রক্সি’–কাণ্ডে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা পদে ফিরে একই কাণ্ডে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে নাম আসায় এক বছর আগে সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ ওরফে তন্ময়। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়। সংগঠনে ফিরে ভর্তি পরীক্ষায় নতুন নতুন জালিয়াতির ঘটনায় তাঁর নাম এসেছে। এসব ঘটনায় তাঁর নামে তিনটি মামলা হয়েছে।

সব৴শেষ গত শুক্রবার নগরের মতিহার থানায় এই নেতার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। একটি পাবলিক পরীক্ষা আইনে, অপরটি অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা এক শিক্ষার্থীকে ‘প্রক্সি চুক্তির’ (নিজের পরীক্ষা অন্যের মাধ্যমে দেওয়া) টাকার জন্য তুলে নিয়ে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা অপর মামলাটি করেন।

গোয়েন্দা পুলিশ মামলার তদন্তভার পেয়েছে বলে জানান মতিহার থানার ওসি রুহুল আমিন। মামলা দুটিতে মুশফিক ছাড়াও শের-ই–বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মহিবুল মমিন ওরফে সনেট এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাকোয়ান সিদ্দিক ওরফে প্রাঙ্গণের নাম রয়েছে।

মামলা হওয়ার পর গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে মুশফিক তাহমিদ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’

আহসান হাবীব নামের ওই শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও হলে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির ঘটনার খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা স্বীকার করায় তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি এখন কারাগারে। তবে প্রক্সি–কাণ্ড ও তাঁকে অপহরণে জড়িত নেতা–কর্মীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুশফিক তাহমিদ প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৭ সালে। সেবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের মাদক অধিশাখার গোপন প্রতিবেদনের তালিকায় তাঁর নাম আসে। গত বছর ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে এক শিক্ষার্থীর পরিবর্তে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বায়েজিত খান নামের এক শিক্ষার্থী আটক হন। তিনি প্রশাসনের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন মুশফিক তাঁকে এ কাজে নিয়োগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ৪ আগস্ট তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে একই বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

মুশফিককে ফাঁসানোর অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাঁর (মুশফিক) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এতে তাঁর ও সাধারণ সম্পাদকের কোনো হাত নেই।’