হাড়কাঁপানো শীত থেকে বাঁচতে কাঠ জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন কয়েকজন ব্যক্তি। সম্প্রতি রংপুর নগরের সিও বাজারে
হাড়কাঁপানো শীত থেকে বাঁচতে কাঠ জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন কয়েকজন ব্যক্তি। সম্প্রতি রংপুর নগরের সিও বাজারে

আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ, রংপুর মেডিকেলে আরও দুজনের মৃত্যু

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় অগ্নিদগ্ধ আরও দুজন মারা গেছেন। কনকনে শীতে আগুন পোহানোসহ গরম পানির ব্যবহার করতে গিয়ে তাঁরা দগ্ধ হয়েছিলেন। এ নিয়ে এবারের শীত মৌসুমে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হলো।

বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন দগ্ধ ৫৪ জন। তাঁদের শরীরের ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ পোড়া। গত এক মাসে রংপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে দগ্ধ হয়ে তাঁরা হাসপাতালে এসেছেন।

মারা যাওয়া দুজন হলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার এলাকার দিলজন বেগম (৫৫)। ২১ জানুয়ারি খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর সময় পরনের কাপড়ে আগুন লেগে তিনি দগ্ধ হন। মৃত অন্যজন রংপুর নগরের মুন্সিপাড়া এলাকার আলেয়া বেগম (৬০)। ২০ দিন আগে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তাঁরা দুজনই গতকাল শনিবার মারা যান। এ ছাড়া দুই সপ্তাহ আগে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল।

হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত গত এক মাসে শীতে আগুন পোহানোসহ গরম পানির ব্যবহার করতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ৫৬ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। বার্ন ইউনিটসহ সার্জারি, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে তাঁদের চিকিৎসা চলছিল। দগ্ধ রোগীদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। যাঁরা শীত থেকে বাঁচতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। দুজনের মৃত্যুর পর এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫৪ জন দগ্ধ রোগী।

নীলফামারীতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে শিশুটি এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। যন্ত্রণায় কাতর মেয়ের পাশে মা আনজু বেগম। রোববার হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে

বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের দায়িত্বরত চিকিৎসক শাহ মো. আল মুকিত প্রথম আলোকে বলেন, চিকিৎসাধীন রোগীরা আগুন পোহানোসহ গরম পানির ব্যবহার করতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের শরীরের ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

তিনি বলেন, কয়েক দিন হলো রংপুর অঞ্চলে কনকনে শীত পড়েছে। শীত থেকে বাঁচতে গ্রামাঞ্চলের মানুষ খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে গরম পানির ব্যবহারও বেড়ে যায়। অসাবধানতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। তাঁরা সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।