ঢাকার কর্মস্থল থেকে রাতে সাভারের কলমা এলাকার নিজের বাসায় ফিরছিলেন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক (ক্রাইম রিপোর্টার) ইকবাল হাসান ফরিদ। বাসার কাছাকাছি পৌঁছালে পেছন থেকে নাম ধরে ডাকেন অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি। পরে আরও এক ব্যক্তি আসেন। তাঁরা ইকবাল হাসানকে সাভার থেকে চলে যেতে বলেন। নইলে তাঁকে সপরিবার হত্যার হুমকি দেন।
পরে ইকবাল হাসানের মাথায় মরিচের গুঁড়া সদৃশ ঝাঁজালো রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে পালিয়ে যায় দুই দুর্বৃত্ত। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে সাভারের দক্ষিণ কলমা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক ইকবাল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে বাসার কাছাকাছি পৌঁছালে মাস্ক পরা এক ব্যক্তি পেছন থেকে ফরিদ ভাই বলে ডাক দেন। এ সময় তিনি পেছন ফিরে তাকান। এরপর সামনের দিকের গাছের আড়াল থেকে অপর এক ব্যক্তি বের হন। পরে তাঁরা এক মাসের মধ্যে তাঁকে (ইকবালকে) সাভার থেকে চলে যেতে বলেন। নইলে তাঁকে সপরিবার হত্যার হুমকি দেন। এমন সময় পেছনের দিকে থাকা ব্যক্তি তাঁর মাথায় মরিচের গুঁড়া সদৃশ ঝাঁজালো পাউডার–জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে দিয়ে ঘষা দেন। এতে তাঁর মুখে ও পিঠে ঝাঁজালো গুঁড়া ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায় ওই দুই দুর্বৃত্ত।
ঝাঁজালো পাউডার–জাতীয় পদার্থের কারণে চোখ, মুখ, ঘাড় ও পিঠে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হলে ইকবাল হাসান দ্রুত ঘটনাস্থলের পাশেই তাঁর বাসায় গিয়ে শরীরে পানি ঢালেন। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনচার্জ মো. ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, ইকবাল হাসানের মুখমণ্ডলে ঝাঁজালো কোনো রাসায়নিক পদার্থ দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি সুস্থ আছেন।
ইকবাল হাসান আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা সাভারের যে দুজন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে হুমকি দিয়েছেন, তাঁদের কারও সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। মূল ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জনপ্রতিনিধিদের নাম ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে।’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজামান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে এবং জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইকবাল হাসান এ ঘটনায় অভিযোগ দিলে সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।