চট্টগ্রামের রাউজানে বেশ কয়েকবার জনসম্মুখে অস্ত্র প্রদর্শন করা জেলা যুবদল নেতা মুহাম্মদ জানে আলমকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে চারটি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল। তবে সেগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া জানে আলম বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খন্দকার গোলাম আকবরের অনুসারী এবং জেলা যুবদলের যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক। তিনি নোয়াপাড়া ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গুহ রক্ষিত পাড়ার আবদুল ছালামের ছেলে। গ্রেপ্তার জানে আলমের বড় ভাই একসময়ের পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক। তিনি বর্তমানে সৌদিপ্রবাসী। গত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জানে আলম স্থানীয় নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে হেরে যান। গতকাল রাতেই যৌথ বাহিনী তাঁকে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
দলীয় সূত্র জানায়, গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দিন বিকেল থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা পালিয়ে যান। এরপর বিএনপির নেতারা এলাকায় ফিরতে শুরু করেন। এলাকায় ফিরে গত সাড়ে তিন মাসে নিজেদের অন্তর্কোন্দলের জেরে শুধু নোয়াপাড়া ইউনিয়নেই ২০ থেকে ২২ বার সংঘর্ষে জড়ান দলের নেতা-কর্মীরা। প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এবং গুলি ছুড়তে দেখা যায় একাধিক নেতা-কর্মীকেও। যার একাধিক ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে যুবদলের নেতা জানে আলমকেও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা যায়।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শফিকুল আলম চৌধুরী আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে গ্রেপ্তার জানে আলমকে। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ মোট চারটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে সরকার পরিবর্তনের পর। আগের একাধিক মামলাও আছে, তবে সেগুলোতে জামিন হয়েছে তাঁর।