রাজশাহীর বাগমারায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় পণ্ড হয়েছে। কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে কয়েক দফায় বাধার মুখে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এ সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। পরে চারজনকে ধরে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভবানীগঞ্জে এসব ঘটনা ঘটে।
এর আগে আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে মিজানুর রহমান (২৩) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে দুই শতাধিক আন্দোলনকারী ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ থেকে মিছিল বের করলে স্থানীয় যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ধাওয়া দেন। এ সময় হামলায় ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতারা ভবানীগঞ্জ বাজার থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী কয়েকজনকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আজ দুপুরে সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ‘অরাজকতা ও কোটা আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে’ একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, সকাল ১০টার আগেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। তাঁরা লাঠি, রডসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে মহড়া দেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদের ভেতরে অবস্থান নেন। এ ছাড়া পুলিশ পাহারা বসায় ভবানীগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। সকালে বিচ্ছিন্নভাবে কোটাবিরোধীরা ভবানীগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ঢোকার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে কর্মীরা লাঠি ও রড নিয়ে কোটাবিরোধীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁদের তাড়িয়ে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুল ইসলাম বলেন, তাঁরা আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করে দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক মাহাবুর রহমান বলেন, কোটাবিরোধীরা অযথা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছিল। বাগমারায় কোনো অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। তাঁরা মাঠে আছেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে কোনো অঘটন ঘটেনি। আটক চারজনের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে মনে হচ্ছে। তবে আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে আটক একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।