দুই পাশে গর্ত থাকায় আতঙ্ক

ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের ঝিনাইদহের ৩০ কিলোমিটার অংশের দুই পাশ থেকে গাছ কেটে নেওয়ার পর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশের ৩০ কিলোমিটারে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ওই অংশের মহাসড়ক সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। এতে মহাসড়কের দুই পাশে চার শতাধিক ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই অংশ দিয়ে চলাচলের সময় যানবাহন গর্তে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে যানবাহনের চালকেরা দ্রুত গর্তগুলো ভরাটের দাবি জানিয়েছেন।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) ঝিনাইদহ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা ভায়া ঝিনাইদহ মহাসড়কটি প্রশস্ত করার কাজ শুরু হচ্ছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঝিনাইদহ থেকে যশোর চাচড়া মোড় পর্যন্ত সম্প্রসারণ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছেন। এর মধ্যে ঝিনাইদহ অংশে রয়েছে ঝিনাইদহ থেকে বারোবাজার ফুলবাড়ি পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়ক। ইতিমধ্যে এই সড়কের দুই পাশের জমি অধিগ্রহণের জন্য মাপজোখের কাজ করা হয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে সড়কটির দুই ধারের ছোট-বড় গাছ কর্তন। শতবর্ষী গাছও রয়েছে এই কর্তনের তালিকায়।

স্থানীয় লোকজন জানান, সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জেলা পরিষদ ঝিনাইদহ অংশের ৩০ কিলোমিটারের গাছ নিলামে ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। ঝিনাইদহ থেকে বারোবাজার ফুলবাড়ি পর্যন্ত অসংখ্য গাছ ঠিকাদারের লোকজন কেটে ফেলেছে। সাত মাস ধরে গাছগুলো কাটার কাজ চলেছে। গাছ কাটতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন সড়কের পাশে বড় বড় গর্ত খুঁড়েছে। গর্ত খুঁড়ে গাছ কেটে গাছের গোড়া সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু গর্ত ভরাট করা হচ্ছে না। ওই ৩০ কিলোমিটারে চার শতাধিক ছোট-বড় গর্ত এখনো আছে।

ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা এনামুল কবির জানান, তাঁদের চোখের সামনে খুঁড়ে রাখা গর্তগুলোতেই মাঝেমধ্যে ছোট ছোট যানবাহন পড়ে যাচ্ছে। আনুমানিক ১০ দিন আগে সড়কের পাশের একটি গর্তে একজন বাইসাইকেল আরোহী পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়ভাবে তাঁকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, বড় কোনো যানবাহন কোনো কারণে সড়কের ধারে নেমে গেলেই গর্তে পড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে।

ওই সড়কে চলাচলকারী একটি যাত্রীবাহী বাসের চালক মিজানুর রহমান জানান, সড়কের ওই অংশে গর্ত থাকায় ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ৫০-৫৫টি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে গাড়ি চালানো যায় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে গর্তের ভয়ে সড়ক থেকে গাড়ির চাকা মাটিতে নামানো যাচ্ছে না।

আবদুল খালেক নামের এক ইজিবাইকচালক জানান, ‘এমনিতে বড় গাড়িগুলো আমাদের সাইড দিতে চায় না। মাঝেমধ্যে চাপিয়ে পিচ থেকে মাটিতে নামিয়ে দেয়। এখন গর্তের ভয়ে আমরা স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছি না।’

ঠিকাদারদের একজন ফরিদ উদ্দিন বলেন, তাঁদের গাছ কাটার কাজ এখনো চলছে। কাটা হয়েছে এমন কিছু গাছের গোড়া এখনো সরানো বাকি রয়েছে। এগুলো সরানোর পর তাঁরা গর্ত ভরাট করবেন। তাঁরা ভেকু মেশিন দিয়ে ভরাটকাজ করবেন।