বিউটির বানানো পিঠা খেতে এসেছে এক শিশু। সোমবার সকালে যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহরের বালিয়াডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ায়
বিউটির বানানো পিঠা খেতে এসেছে এক শিশু। সোমবার সকালে যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহরের বালিয়াডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ায়

শীতসকালের নরম রোদে গরম পিঠা খাওয়ান বিউটি

শীতের সকালে মিষ্টি পিঠা তৈরি করে বিক্রি করেন বিউটি। শীতসকালের নরম রোদে বিউটির বানানো গরম পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় করেন তাঁর অস্থায়ী দোকানে। পিঠা তৈরি ও বিক্রি করেই চলে তাঁর জীবন–জীবিকা। বিউটি এলাকায় ‘পিঠা আপা’ হিসেবে পরিচিত।

যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহরের বালিয়াডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ায় বিউটির বাড়ি। খেজুরের গুড় দিয়ে পাকান পিঠা ও ভাপা পিঠা বানিয়ে তিনি বিক্রি করেন। তাঁর পিঠার সুনাম আশপাশের মানুষের মুখে মুখে।

বিউটি ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ির সামনে টেবিল নিয়ে বসে যান পিঠা বানাতে। চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড় ও নারকেল নিয়ে তিনি ব্যস্ত সময় কাটান। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বিউটির হাতে বানানো পাকান পিঠা ও ভাপা পিঠা দারুণ সুস্বাদু। তিনি এই দুই পিঠা তৈরিতে বিশেষ পারদর্শী। সকালে পাড়ার ছেলেমেয়েরাসহ সবাই তাঁর পিঠা খেতে আসেন।

শীতের তিন থেকে চার মাস ছাড়া তাঁর সংসারে অভাব লেগেই থাকে। দুঃখ-কষ্টেই জীবন পার করছেন। বিধবা ভাতার জন্য কয়েকবার পৌরসভায় কাগজ জমা দিয়েছিলেন, কিন্তু বিধবা ভাতা কপালে জোটেনি।
বিউটি, পিঠা বিক্রেতা

মনিরামপুর উপজেলা থেকে ব্যবসায়িক কাজে কেশবপুর শহরে আসেন মুন্না নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি বিউটির বানানো সুস্বাদু পিঠা বিষয়ে জানতে পিঠা খেতে এসেছেন। হাসানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিনি বিউটির বানানো পিঠার ভক্ত। পাকান পিঠা তিনি বেশি খান।

সকাল হলেই পাড়ার ছেলেমেয়েরা বিউটির পিঠা খেতে ভিড় করে বলে জানালেন বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা তাজউদ্দীন। প্রথম শ্রেণিপড়ুয়া সাকিরুলসহ তার মতো অনেকেই নিয়মিত পিঠা খেতে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা আবু সাঈদ বলেন, সকালে হাঁটতে এসে তিনি পিঠা খান।

পিঠা নিয়ে বসে আছেন বিউটি। সোমবার সকালে যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহরের বালিয়াডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ায়

আজ সোমবার সকালে পিঠা তৈরির কারিগর বিউটির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। ছয় সন্তানের মধ্যে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এক সন্তান বরফকলে কাজ করেন। অপরজন বেকার। অভাবের সংসার চালাতে তাই পিঠা তৈরি ও বিক্রির কাজ বেছে নিয়েছেন। প্রতিটি পিঠা পাঁচ টাকা করে বিক্রি করেন।

বিউটি জানান, পিঠা বিক্রি করে প্রতিদিন তাঁর পাঁচ থেকে ছয় শ টাকা লাভ হচ্ছে। যত শীত পড়বে, তত বাড়বে পিঠার চাহিদা। শীতের তিন থেকে চার মাস ছাড়া তাঁর সংসারে অভাব লেগেই থাকে। দুঃখ-কষ্টেই জীবন পার করছেন। বিধবা ভাতার জন্য কয়েকবার পৌরসভায় কাগজ জমা দিয়েছিলেন, কিন্তু বিধবা ভাতা কপালে জোটেনি।